ঢাকা বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

কথা রাখল আ. লীগ, রাসেলস ভাইপার জমা দেওয়া ৩ যুবককেই দেবে ৫০ হাজার


নিউজ ডেস্ক
৪:৩৪ - মঙ্গলবার, জুন ২৫, ২০২৪
কথা রাখল আ. লীগ, রাসেলস ভাইপার জমা দেওয়া ৩ যুবককেই দেবে ৫০ হাজার

‘জীবিত রাসেলস ভাইপার সাপ ধরে বনবিভাগে জমা দেওয়া হলে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার করে টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে’ জেলা আওয়ামী লীগের এ ঘোষণার পর রোববার (২৩ জুন) ফরিদপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে তিনটি জীবিত রাসেলস ভাইপারের বাচ্চা জমা দেন সদরের রেজাউল করিম, আজাদ শেখ ও শাহজাহান খান।

রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ ওই ঘোষণা প্রত্যাহার কারার আগে মুহূর্তে সাপ তিনটি বন বিভাগে জমা পড়ায় তাদের প্রত্যেকে ঘোষিত ৫০ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে বলে ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক। আর জমাকৃত সাপ তিনটি সোমবার (২৪ জুন) খুলনায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগে পৌঁছে দেন ফরিদপুর বন বিভাগের প্রহরী মো. জাহিদুল ইসলাম। রাসেলস ভাইপার তিনটি গ্রহণ করেন ওই কার্যালয়ের বন্যপ্রাণি ও জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা তন্ময় আচার্য। 

তন্ময় আচার্য জানান, যে তিনটি রাসেলস ভাইপার সাপ ফরিদপুর বন বিভাগ থেকে তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে তার মধ্যে একটি সাপ ইতোমধ্যে মারা গেছে। আরেকটি মৃতপ্রায়, সেটির বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ। শুধুমাত্র একটি সাপ সুস্থভাবে বেঁচে আছে।

তিনি বলেন, জীবিত সাপটির ব্যাপারে বন বিভাগ খুলনা ও ঢাকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ফরিদপুরের বিভাগী বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভূঁইয়া বলেন, ২০১২ সালের বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী সরিসৃপজাতীয় প্রাণি ধরা বা মারা আইনত দণ্ডনীয়। সে আইন অনুযায়ী সাপ ধরা বেআইনী। এভাবে ধরা সাপ তারা জমা রাখতে বা প্রাপ্তি স্বীকারপত্র দিতে পারেন না। তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির কথায় তাদের সাপগুলো জমা নিতে হয়েছে এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কথায় প্রাপ্তি স্বীকারপত্র দিতে হয়েছে।

এর আগে রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ একটি ঘোষণাপত্র দিয়ে বলে, গত ২০ জুন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তক্রমে রাসেলস ভাইপার সাপ সম্পর্কিত একটি ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। যা প্রকৃতপক্ষে বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনের পরিপন্থী। বিষয়টি বন ও পরিবেশ আইনের সাথে সাংঘর্ষিক বিধায় জেলা আওয়ামী লীগ সর্বসম্মতভাবে রাসেলস ভাইপার সংক্রান্ত ঘোষণাটি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।

শাহ মো. ইাশতিয়াক ঢাকা পোস্টকে বলেন, জীবিত রাসেল ভাইপার সাপ ধরে বন বিভাগে জমা দিলে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে- জেলা আওয়ামী লীগের এ ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে গতকাল রোববার যে তিনজন সাপ ধরে বন বিভাগে জমা দিয়েছে তাদের পুরস্কার বাবদ টাকা দেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, সাপ সম্পর্কিত ঘোষণাটি আমরা প্রত্যাহার করেছি গতকাল সন্ধ্যা ৬টায়। তার আগে ওই তিনটি সাপ বন বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের ঘোষণা অনুযায়ী অনতিবিলম্বে ওই তিন ব্যক্তিকে পুরস্কার বাবদ ৫০ হাজার করে টাকা প্রদান করব। যেহেতু কথা দিয়েছিলাম সেজন্য কথা রক্ষার্থে তাদের টাকাগুলো দিয়ে দেব।

প্রসঙ্গত, বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইন উপেক্ষা করে প্রথমে রাসেল ভাইপার মারতে পারলে গত ২০ জুন ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা দিয়েছিল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক। এ নিয়ে সমালোচনা হওয়ার একদিন পরে ২১ জুন জেলা আওয়ামী লীগ ওই ঘোষণা থেকে কিছুটা সরে এসে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, নিজে সুরক্ষিত থেকে জীবিত রাসেল ভাইপার ধরে বনবিভাগে জমা দেওয়া হলে তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। তবে জেলা আওয়ামী লীগের এ সংশোধিত ঘোষণাও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনের পরিপন্থী। এ ঘোষণার পর রাসেলস ভাইপার জীবিত ধরার জন্য তোড়জোর শুরু হয়ে যায় ফরিদপুর সদরের নানা গ্রামে।