ভাড়া পাওয়া যায় না এমন জিনিস অনেকটা কম রয়েছে। তবে সব ভাড়া পাওয়া গেলেও বউ ভাড়া পাওয়া যায় এমন কথা শুনলে হয়তবা অনেকেই হাসি দিয়ে উড়িয়ে দিবেন। কিন্তু না আসলেই এমন একটি জায়গা রয়েছে যেখানে বউও ভাড়া দেওয়ার রীতি চালু হয়েছে। যেখানে প্রয়োজন অনুসারে কখনো ঘণ্টা ভিত্তিক, আবার কখনো সারাদিনের জন্য ভাড়া নিতে পারবেন বউ।
শুনলে অবাক হবে এটি অন্য কোন দেশে নয় বাংলাদেশেই রয়েছে এমন একটি জায়গায়। জায়গাটি হল গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভাদুন ও তার আশপাশের কয়েকটি গ্রাম। তবে বাস্তবের জন্য যদি কেউ ভেবে থাকেন তাহলে হয়তো ভুল করবেন। শুধুমাত্র ক্যামেরার সামনের জন্যই এই ভাড়া।
শুধু বউ নয় ছোটছোট শিশু, হাঁস-মুরগী কিংবা গরু-ছাগল সবই ভাড়া পাওয়া যায় এই গ্রামগুলোতে। নাটক বা সিনেমার শুটিংয়ের জন্য সবকিছুই ভাড়ায় পেয়ে যাবেন এখানে।
গাজীপুর জেলা শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ভাদুন গ্রাম। এই গ্রামে ৯০-এর দশক থেকে শুরু হয়েছে নাটক-সিনেমার শুটিং কার্যক্রম। এ গ্রামটিকে বলা হয়ে থাকে চলচ্চিত্র শিল্পীদের আবাসভূমি।
প্রতিদিনই শুটিং থাকেই এ গ্রামে। শুটিংকে কেন্দ্র করে ভাদুন গ্রামে রয়েছে মেঘলা, আকাশ ভিলা, ঐশী শুটিং, বিলভিলা, হাসনাহেনা, শাহিনের বাড়ি, আপন ভুবন, কৃষ্ণচূড়াসহ অজস্র শুটিং স্পট।
এ গ্রামের রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতেই আপনার সঙ্গে হয়তো দেখা হয়ে যাবে কোন এক অভিনেতা বা অভিনেত্রীর সাথে।
শুটিং স্পটের মালিক ও পরিচালকরা জানান, শুটিংয়ের প্রয়োজনে ঘণ্টা ভিত্তিক কিংবা সারাদিনের জন্য বউ, শিশু বাচ্চা, নাপিত, কামার, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী, ঝাড়ু, দাসহ সবকিছুই ভাড়ায় পাওয়া যায় এখানে।
মূলত সালাহউদ্দিন লাভলু পরিচালিত হাড়কিপ্টা, সাকিন সারিসুরি, গরুচোর, পত্রমিতালী, কলেজ স্টুডেন্ট, ঢোলের বাদ্যি, ঘর কুটুম, আলতা সুন্দরী, ওয়ারেন নাটকগুলো প্রচারিত হবার পর ব্যাপকভাবে গ্রামের নাটক দর্শকপ্রিয়তা পায়। নির্মাতারা ভাদুনে যেতে শুরু করেন।
এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘২০০৭ সালে ছিল মাত্র একটি শুটিং বাড়ি। একের পর এক শুটিং বাড়ি গড়ে উঠলেও এখানে নেই মালিকদের কোনও সংগঠন, নেই শুটিংয়ের তেমন ধরাবাঁধা নিয়মনীতির বালাই। তবে আনন্দের খবর হচ্ছে এই শুটিংকে কেন্দ্র করে এলাকার কিছু মানুষের একটু আয় রোজগার হচ্ছে।’