ঢাকা সোমবার, নভেম্বর ৪, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

বন্যার্তদের পাশে তিতুমীর কলেজের শিক্ষক আব্দুল হামিদ


নিউজ ডেস্ক
১৪:২৯ - শুক্রবার, অক্টোবর ১১, ২০২৪
বন্যার্তদের পাশে তিতুমীর কলেজের শিক্ষক আব্দুল হামিদ

তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি: সম্প্রতি স্মরণকালের অন্যতম বড় বন্যায় কবলিত হয়েছে দেশ। প্রথমে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লা এবং এর পরই দেশের উত্তর ও উত্তর-মধ্যাঞ্চলের নেত্রকোণা, শেরপুর, হালুয়াঘাট প্লাবিত হয় বন্যার পানিতে। এসব এলাকায় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিতুমীর কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ।

৯ অক্টোবর বুধবার ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর ও হালুয়াঘাটে প্রায় ৮০০-এর বেশি বন্যার্ত পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন আবদুল হামিদ ও তার টিম। শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত তিনটি টিমের মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকায় ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন তারা। এর আগে ফেনী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও কুমিল্লার ভয়াবহ বন্যার সময়ও তিনি কবলিত এলাকায় ছুটে গিয়ে বিভিন্নভাবে সহায়তা প্রদান করেন। এতে অসহায় পরিবারগুলোর ঘর মেরামতসহ প্রকৃত হকদারদের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ করেন। শুধু নোয়াখালী এবং লক্ষীপুরে ঘর মেরামত বাবদ ৭ লাখ টাকার সহায়তা প্রদান করেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া একটি পোস্টে প্রভাষক মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ বলেন, আমি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছি, দেশের মানুষের প্রতি আমার অনেক ঋণ। সেই ঋণের কিছুটা পরিশোধের চেষ্টায় এই শ্রম। এই সহায়তার অর্থ যোগানে আমি আমার শখের কিছু কবুতর বিক্রি করেছি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি আরো জানান, বন্যাকবলিত ময়মনসিংহ জেলার মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে আলিসা বাজার, হালুয়া ঘাট, শেরপুর জেলায় তিনটি টিম হয়ে আমরা ৮০০ এর বেশি পরিবারকে ত্রাণ উপহার ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছি। আলিশা বাজার হতে ২০ কিলো ভিতরে ট্রলার ছাড়া যাওয়ার কোনো উপায় ছিল না। চারদিকে পানিবন্দি মানুষ। খারাপ অবস্থা শেরপুরের নালিতাবাড়িও। স্বচক্ষে না দেখলে বুঝার উপায় নেই মানুষগুলো কতটা কষ্টে পানি বন্দি আছে।

আমার এ কাজে তিতুমীর কলেজের বিভিন্ন বিভাগের এক ঝাঁক ছাত্র ছাত্রী খাবার প্যাকেটিং থেকে শুরু করে স্পটে দেয়া পর্যন্ত সহযোগিতা করেছে। আমার যতটুকু সাধ্য ছিল চেষ্টা করেছি। কিছুটা কষ্ট হয়েছে কিন্তু বন্যাকবলিত মানুষের কষ্ট দেখে তা বিলীন হয়ে গেছে। ফান্ড কালেকশনে নিলামে কোরবানি হয়েছে আমার ও আমার ভাইদের শখের পোষা কবুতর। বন্যাকবলিত এলাকায় যা অবস্থা দেখেছি আমি পুনরায় যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। টাকা কোথায় থেকে আসবে জানি না। তবে আমি কখনও উদ্যোগ নিয়ে বিফল হয়নি। নিশ্চয়ই আল্লাহ একটা ব্যবস্থা করে দিবেন।

শিক্ষার্থীদের সমন্বিত টিমের শিক্ষার্থী মিয়া আমিরুল ইসলাম বলেন, দুর্গত এলাকায় মানুষের সহযোগিতার প্রয়োজন। স্যারের নেতৃত্বে আমরা দুই পর্বে বিভক্ত হয়ে এইসব এলাকায় কাজ করেছি। মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য এ কথাগুলোর যথার্থতা এখানেই প্রতিফলিত হয়। আমি বিভিন্ন সামাজিক কাজে সবসময় প্রথম সারিতে থেকে কাজ করেছি এবং ভবিষ্যতেও এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। সমাজের সামর্থ্যবানদের এতে এগিয়ে আসার অনুরোধ।

ত্রাণ সহায়তায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার অভিজ্ঞতা ছিল ভীষণ প্রশান্তিদায়ক। মানুষের দুঃসময়ে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলে তাদের কষ্ট অনেকাংশে লাঘব হয়। সম্প্রতি ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও শেরপুরে বিভিন্ন টিমের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল অসাধারণ।

উল্লেখ্য, শিক্ষক আব্দুল হামিদ বিভিন্ন সময়ে নিজ এবং বিভিন্নভাবে তুলিত অর্থ দিয়ে মানুষদের মাঝে সহায়তা করে আসছেন।