ঢাকা বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

বঙ্গবন্ধু হত্যার মাধ্যমে এ জাতি কলঙ্কিত হয়েছে বিশ্ব দরবারে


নিউজ ডেস্ক
১৮:৪৬ - রবিবার, আগস্ট ১৪, ২০২২
বঙ্গবন্ধু হত্যার মাধ্যমে এ জাতি কলঙ্কিত হয়েছে বিশ্ব দরবারে

মোঃ সাইফুল ইসলাম মিঠু

বাংলাদেশ কিংবা বাঙালি এই দুইটি জিনিসের সাথে অঙ্গাঙ্গী ভাবে যার নাম জড়িত তিনি এক অজপাড়াগাঁ থেকে আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠা ব্যাক্তি মুজিব। যার অনন্য ব্যাক্তিত্ব ২০০ বছরের ইংরেজ উপনিবেশিক শাসনের পর টানা ২৪ বছরের পাকিস্তানি শোসন থেকে মুক্তি দিয়েছিল এ জাতিকে। ছোটবেলা থেকেই রাজনৈতিক সচেতন এ নেতা নানা আন্দোলনের অগ্রভাগে ভূমিকা রেখেছিলেন। এদেশে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির সূচনায় তাঁর ভূমিকা ছিল অপরিসীম। 

যার সম্পর্কে পশ্চিম জার্মানী পত্রিকায় লেখা হয়েছিল, শেখ মুজিবকে চতুর্দশ লুই য়ের সাথে তুলনা করা যায়। জনগন তার কাছে এত প্রিয় ছিল যে লুই ইয়ের মত তিনি এ দাবী করতে পারেন আমি ই রাষ্ট্র। অন্যদিকে নিউজ উইক তাঁকে পয়েট অফ পলিটিক্স হিসেবে অবিহিত করা হয়েছে।

তাঁর নেওয়া প্রত্যেকটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিল মুক্তি সংগ্রামের অংশ। ১৯৪৮ ৪ঠা জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর এক দূরদর্শী সিদ্ধান্ত ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। যার প্রমাণ মিলে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে। তিনি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করে গেছেন। তার সম্পর্কে ফিদেল কাস্ত্রো বলেছিলেন, আমি হিমালয় দেখিনি কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব এবং সাহসিকতায় তিনিই হিমালয়।

আমরা বাঙালি হিসেবে এতটাই দূর্ভাগা যে, সেই পহাড়সম নেতাকে আমাদেরই কিছু বিপদগামী সেনা সদস্য হত্যা করতে কুণ্ঠিত হননি। সারা বিশ্বের কাছে বঙ্গবন্ধুর স্বপরিবারে হত্যাকাণ্ডের পর আমরা বেঈমান জাতি হিসিবে নিজেদের কালিমা লেপন করলাম!

তাঁর মৃত্যুর পর উইলিবান্ট বলেছিলেন, মুজিব হত্যার পর বাঙালীদের আর বিশ্বাস করা যায় না, যারা মুজিবকে হত্যা করেছে তারা যেকোন জঘন্য কাজ করতে পারে। বাংলাদেশ বিনির্মানের চরম শত্রু এবং বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী সেই হেনরি কিসিঞ্জার বলতে বাধ্য হয়েছিলেন, আওয়ামিলীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের মত তেজী এবং গতিশীল নেতা আগামী বিশ বছরের মধ্যে এশিয়া মহাদেশে আর পাওয়া যাবে না।

ফিদেল কাস্ত্রো দুঃখ করে বলেছিলেন, শেখ মুজিবের মৃত্যুতে বিশ্বের শোষিত মানুষ হারাল তাদের একজন মহান নেতাকে,আমি হারালাম একজন অকৃত্রিম বিশাল হৃদয়ের বন্ধুকে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীও হতাশার সুরে বলেছিলেন শেখ মুজিব নিহত হবার খবরে আমি মর্মাহত। তিনি একজন মহান নেতা ছিলেন। তার অনন্যসাধারন সাহসিকতা এশিয়া ও আফ্রিকার জনগনের জন্য প্রেরণাদায়ক ছিল।

আজো সেই ১৫ই আগস্ট ঘুরে আসে বাংলার প্রতিটি ঘরে। এদেশীয় ষড়যন্ত্রকারীরা প্রতিনিয়ত ওঁৎ পেতে থাকে এদেশকে ধ্বংসের লক্ষ্যে। বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা কে হত্যার চেষ্টাও করেছে একাধিকবার। আগস্ট এলেই ষড়যন্ত্রের নানা কৌশল দেখা যায় স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানী প্রেতাত্মাদের ভিতর। জাতির পিতার হত্যার যে দায় এ জাতির ওপর ছিল, তার কালিমা কিছুটা হলেও মোচন হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদৌলতে, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ফাঁসি প্রদানের মাধ্যমে। এখন সময় হয়েছে শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে, এদেশ থেকে হত্যাকারীদের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকেই সামাজিকভাবে বর্জন করার। তবেই এদেশ আবারও বিশ্বের বুকে ফিরে পাবে অতীতের সেই গৌরব। তবেই পূর্ণতা পাবে সুকান্তের সেই কবিতা, 


সাবাস, বাংলাদেশ, এ পৃথিবী

অবাক তাকিয়ে রয়ঃ

জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার

তবু মাথা নোয়াবার নয়।


লেখক- 

সাবেক সহ সভাপতি, শেরেবাংলা থানা সেচ্ছাসেবকলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর।