ঢাকা বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

দুই ছেলেকে বাঁচাতে গিয়েই খুন হন সুরুজ, মূল আসামিসহ গ্রেপ্তার ৪


নিউজ ডেস্ক
২০:৪৯ - শনিবার, জুন ২৯, ২০২৪
দুই ছেলেকে বাঁচাতে গিয়েই খুন হন সুরুজ, মূল আসামিসহ গ্রেপ্তার ৪

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ মিয়া হত্যাকাণ্ডের মূল আসামিসহ এজাহারনামীয় চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- প্রধান আসামি কাশিপুরের মো. সফর আলি মাঝির ছেলে আলাউদ্দিন ওরফে হীরা (৩৫), পশ্চিম ভোলাইলের আওলাদ হোসেনের ছেলে মো. আলআমিন (২২), একই এলাকার মো. জাফরের ছেলে মো. রাসেল (২০) ও মো. সেলিমের ছেলে মো. সানি।

রোববার (৩০ জুন) সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীনগরে র‍্যাব-১১ সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান সিইও লেফটেন্যান্ট কর্নেল  তানভীর মাহমুদ পাশা।

র‍্যাব জানায়, র‍্যাব-১১ এর একটি অভিযানিক দল শনিবার (২৯ জুন) নারায়ণগঞ্জ সদরের সৈয়দপুর থেকে সুরুজ মিয়া হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি আলাউদ্দিন ওরফে হীরাকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যমতে অপর তিন আসামিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার রতনপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা যায়, ভুক্তভোগী সুরুজ মিয়ার সঙ্গে প্রধান আসামি আলাউদ্দিন ওরফে হীরা এবং তার ভাই সালাউদ্দিন ওরফে সালুর আগে থেকেই থেকেই বিরোধ ছিল। ঘটনার ১০-১৫ দিন আগে গ্রেপ্তারকৃত আসামি হীরা ও তার ভাই সালু এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনে গিয়ে ভবনের মালিকের নিকট চাঁদা দাবি করেন। ওই ভবনের মালিক এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি হিসেবে সুরুজ মিয়ার কাছে বিচার দেন। সুরুজ মিয়া আসামি হীরা ও সালুর বাবাকে বিষয়টি অবহিত করেন এবং হীরা ও সালুকে চাঁদাবাজি থেকে বিরত থাকতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন হীরা ও সালু।

পরবর্তীতে গত ২৭ জুন দুপুরে সুরুজ মিয়া আলী পাড়া জামে মসজিদে থাকাকালীন আলাউদ্দিন ওরফে হীরার নেতৃত্বে অজ্ঞাত ২০-২৫ জন প্রথমে সুরুজ মিয়ার বড় ছেলে রাজু (৪৩) এবং ছোট ছেলে জনির (৪১) পথরোধ করে অতর্কিতভাবে আক্রমণ করে। হামলাকারীদের প্রত্যেকের হাতে রামদা, বগিদা, ছোরা ,লোহার রড ছিল। একপর্যায়ে গ্রেপ্তারকৃত আসামি হীরা হাতে থাকা রামদা দিয়ে রাজুর মাথায় কোপ দিতে গেলে রাজু হাত দিয়ে ঠেকালে তার হাতের কনুইয়ে আঘাত লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হন। অন্য আসামিরাও রাজু ও জনিকে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করতে থাকে। নামাজ শেষে সুরুজ মিয়া খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে এলে তার ওপরও হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। আত্মরক্ষার্থে সুরুজ মিয়া হামলাকারীদের একজনের হাত থেকে রামদা ছিনিয়ে নিলেও সন্ত্রাসীরা তার মাথা, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

গ্রেপ্তারকৃত আসামি আলাউদ্দিন ওরফে হীরার বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় হত্যাচেষ্টা, গুরুতর জখম, ডাকাতি, চুরিসহ কমপক্ষে ১০টি মামলা ও বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। অপর দুই আসামি মো. আলআমিন ও মো. রাসেলের বিরুদ্ধেও একই থানায় মাদক, নারী ও শিশু নির্যাতনের দায়ে একাধিক মামলা ও জিডি রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানায় র‍্যাব। এ ছাড়া অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, মামলার অপর দুই এজাহারনামীয় আসামি বাপ্পী ও জামালকে শনিবার (২৯ জুন) দুপুরে গ্রেপ্তার করে ফতুল্লা থানা পুলিশ। এই নিয়ে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়ালো ছয়ে। এর আগে  শুক্রবার (২৮ জুন) দিবাগত রাতে নিহতের ছেলে মুন্না বাদী হয়ে সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন ওরফে হীরা, সালু, তমাল, সফর আলিসহ ২১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহত সুরুজ মিয়া ফতুল্লার কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি আলীপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতিও ছিলেন।