শাহরিয়ার হোসেন শাহপরান
ঘুটঘুটে আঁধার কাটিয়ে আলো ঝলমলে সুন্দরতম দিনের অপেক্ষা করছে ২০৬ অস্থিবিশিষ্ট এক বাঙালি মানব মন।কবে তৃষ্ঞার্ত হৃদয়পুরে সবুজয়নি কিশলয় প্রতিস্থাপিত হবে সেই অপেক্ষায় ছটফট করছে চারপ্রকোষ্ঠের আত্মাগৃহ।এতো অল্পস্বল্প অপেক্ষার প্রহরও বেশ দীর্ঘজট মনে হয়।শীতের রিক্ততায় কবির মন ভালো নেই,প্রকৃতিও খানিকটা আঁটোসাটো হয়ে ছিলো,গাছে-গাছে পাতা নেই,ফুলের দিগন্তজোড়া সমাহার নেই,সূর্য্যি মামাও বেজায় রাগী-হুটহাট মেজাজ হারিয়ে ফেলে।কুয়াশার আড়াল বেয়ে ঢিপঢিপ করে আলোর দেখা মেলে মাঝেমধ্যি।সাদাশ্বেত দাম্ভিক কুয়াশার তোড়ে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। প্রকৃতি শূন্যতার অভাববোধ করে চারদিকে শুভ্রকেশী কুয়াশাজড়ানো হাহাকারকে নিঃশেষ করে উচ্ছসিত আলোকচ্ছটায় পরিপূর্ণ করতে আসে রূপগ্রাহী নিসর্গিক ফাগুনী উতালপাতাল দমকা হাওয়া।শিহরণ জাগায় পুরো হিরন্মময়ী গ্রাম বাংলার মেঠোপথে,রৌদ্রতপী ফসলী মাঠে,আঁকাবাঁকা মনপবোনিয়া নদীর বুকে, ঝড়াপাতার মর্মর দগ্ধবুকে আশুরূপে পান্না সবুজেয়ী ডালপালার মনোহরণি আর্বিভাব।
বিনয়ের সমরোহে কুয়াশারবুড়ি শীতকে বিদায়ী অভিবাদন জানিয়ে নবভোরের আলোকরশ্মিতে কৃষ্ণবর্ণা কোকিল আগমনী গান গেয়ে সাদর সম্ভাষণ জানায় ঋতুরাজ বসন্তকে।হিমশীতলা আবহাওয়া পন্ড করে জেগে উঠে প্রসবণী উষ্ণ অভ্যর্থনা। প্রলয় অলংকারে ঐশ্বর্যমন্ডিত করে নির্সগনেত্রকে।
গাছে গাছে পান্না সবুজের হিরাজহুরতের প্রাচুর্যিকতার অভিলাষ মন্ত্রমুগ্ধ করে মানব মনকে।শিমুলের ডালাপালাজুড়ে লালরঙা কিংবা হলদে লালের জোৎস্নাকেশি পুষ্পে মাতোয়ারা করে তুলে নবীন বসন্তকে।পলাশ কিংবা মাঁন্দারের শাখায় শাখায় লাল লোহিত ভালোবাসা।আম্রবন হলুদীনি মুকুলে ছেঁয়ে গেছে। ফুলে ফুলে মৌমাছির অবাধ চলাচল।
উদাস দুপুর,দক্ষিণা বাতাসে চঞ্চল মন উড়ুউড়ু করে সর্বক্ষণ।খাঁখাঁ কড়া রৌপ্যবর্ণ রৌদ্র।তিয়াশা বাড়ায় সিন্গ্ধ সুকোমল কর্মহীন বিকেলের।এমন কর্মহীন বিকেলে চঞ্চলতা বাড়ায় বুনোপাখিদের কিচিমিচির।
প্রকৃতির নিদারুণ সৌন্দর্যের প্রতীক ঋতুরাজ বসন্ত।