ঢাকা রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

বিজয় থেকে মুক্তির পথে


নিউজ ডেস্ক
১৩:৪২ - রবিবার, ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪
বিজয় থেকে মুক্তির পথে

ডা. সাগর খান :: ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের দিন। রক্তস্নাত সংগ্রামের শেষে এই দিনটিতে স্বাধীনতার সূর্যোদয় ঘটেছিল। কিন্তু এই বিজয়ের মধ্যেই কি আমাদের যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটেছে? স্বাধীনতার সেই চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করে আমাদের ভাবতে হবে—এই বিজয় কেবল একটি ভৌগোলিক মানচিত্রের কিংবা একটি পতাকার, নাকি তার চেয়েও আরও গভীর ও বিস্তৃত কিছু?

বাঙালি জাতির মুক্তির ইতিহাস দীর্ঘ ও বেদনাবিধুর। ব্রিটিশ শাসনের শৃঙ্খল ভাঙতে আমরা লড়েছি, পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ আর বৈষম্যের বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে বুক পেতে দিয়েছি। কিন্তু যে শ্রেণী বৈষম্য, অন্যায়-অবিচার আমাদের সেইসব সংগ্রামের দিকে ঠেলে দিয়েছিল, তা কি পুরোপুরি মুছে গেছে? যুগের পর যুগ পেরিয়েও আমরা আজও সেই একই বৈষম্যের শিকার।

স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরও সেই সংগ্রাম থেমে যায়নি। বৈষম্যের শেকড় আজও সমাজে গেঁথে আছে। কেউ পায় আলোর পরশ, আর কেউ চিরকাল অন্ধকারের বন্দী হয়ে থাকে। অর্থনৈতিক অসমতা, শিক্ষার বৈষম্য, নারী-পুরুষের অসমাধিকার কিংবা সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রশ্নে আমরা এখনও কাঙ্ক্ষিত বিজয় থেকে অনেক দূরে।

তাই আমাদের যুদ্ধ চলতেই থাকবে—যুগ থেকে যুগান্তরে। একটি স্বাধীন মানচিত্র অর্জনই বিজয়ের পরিপূর্ণতা নয়। বিজয়ের সত্যিকারের স্বাদ তখনই আসবে, যখন সমাজের প্রতিটি মানুষ সমান সুযোগ, অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে পারবে। মুক্তির প্রকৃত অর্থ তখনই পূর্ণতা পাবে, যখন কোনো মানুষ আর বঞ্চিত হবে না, শোষিত হবে না, বৈষম্যের অন্ধকারে হারিয়ে যাবে না।

আজ দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বিজয়ের মাস বিদায় নিচ্ছে। কিন্তু এই বিদায় যেন আমাদের থামিয়ে না দেয়। বিজয়ের পতাকা উঁচিয়ে ধরে আমাদের আরও সামনে এগিয়ে যেতে হবে—একটি বৈষম্যহীন সমাজ, একটি মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে পূর্ণতা দেওয়ার জন্য। একদিন হয়তো আমরা সত্যিকার অর্থেই মুক্তির স্বাদ পাব। সেই দিনটিই হবে আমাদের চূড়ান্ত বিজয়।


জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ