সরকারি তিতুমীর কলেজে ৫ জন শিক্ষক দিয়ে দুইটি বিভাগ ক্লাস পরিচালিত
হচ্ছে । বিভাগ দুইটি হলো পরিসংখ্যান ও মনোবিজ্ঞান । বিভাগ দুইটিতে
শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫০০ জন । যার ফলে পড়াশোনা করাতে হিমশিম খেতে
হচ্ছে শিক্ষকদের। র্দীঘদিন যাবৎ নিয়োগ না হওয়ার কারণে শিক্ষক ও
শিক্ষার্থীদের মাঝেও দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। উক্ত বিভাগগুলোতে
নিয়োগ পদ সৃষ্টি না হওয়ার কারণেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলেও জানান
শিক্ষকরা।
কলেজটির বিভাগ দুটোতে খোজঁ নিয়ে জানা যায়, পরিসংখ্যান বিভাগে ৩জন শিক্ষক ও মনোবিজ্ঞানে রয়েছে মাত্র ২ জন শিক্ষক। এছাড়া গেস্ট শিক্ষক এনে ক্লাস করাতেও পোহাতে হচ্ছে বেগ। সময় মতো পাওয়া যায় না গেস্ট শিক্ষকও। দুটো বিভাগে অনার্স প্রতি বর্ষে ৭০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রতিবছরই যুক্ত হচ্ছে কিন্তু শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মাঝেও দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।
সরকারি নীতিমালা অনুসারে, একটি অনার্স-মাস্টার্স মহাবিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগে কমপক্ষে ১২ জন শিক্ষক থাকা উচিত, আর অন্তত ন্যূনতম আটজন থাকতেই হবে। তাদের মধ্যে কমপক্ষে একজন অধ্যাপক, দু'জন সহযোগী অধ্যাপক, দু'জন সহকারী অধ্যাপক ও তিনজন প্রভাষক থাকবেন। কিন্তু এই দুটো বিভাগের মধ্যে মনোবিজ্ঞানে শুধু মাত্র দুই জন সহযোগী অধ্যাপক সংযুক্ত রয়েছেন। আর পরিসংখ্যান বিভাগে দুইজন সহযোগী অধ্যাপক ও একজন সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সংযুক্ত রয়েছেন। এছাড়া বেশির ভাগ বিভাগেরই প্রভাষক পদ রয়েছে শূণ্য।
এ বিষয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী তাসফিয়া আক্তার বলেন, আমাদের বিভাগের মাত্র তিন জন শিক্ষক। তিন জন শিক্ষক দিয়ে আসলে কিছুই হয়না। প্রায় সময়ই সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তাছাড়া পরিসংখ্যান যেহেতু ম্যাথ নির্ভর বিষয় সেক্ষেত্রে শিক্ষক বেশি থাকলে সুবিধা। কিন্তু এখানে হয়েছে উল্টো। শিক্ষার্থী আছে শিক্ষক নেই। আমাদের মান সম্মত পড়াশোনা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর তালাত সুলতানা বলেন, আমরা কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ের আবেদনও করেছি। নিয়োগের বিষয়টি সম্পূর্ণ মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার। তবে শিক্ষক সংকট সমাধানে চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করা যায় আমরা করছি। কিন্তু নিয়োগ হচ্ছে না। কলেজের পূর্বের অধ্যক্ষগণও চেষ্টা করেছেন এ বিষয়ে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কলেজ) মুঃ ফজলুর রহমানের সাথে কথা বলা হয় কলেজটির এই সমস্যা নিয়ে। তিনি জানান, মন্ত্রনালয়ে এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো আবেদন করা হয়নি। কয়জন শিক্ষার্থীর ভর্তির অনুমতি কতজন, তার বিপরীতে কতজন শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করা প্রয়োজন তা আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। তবে আমরা যতটুকু জানি সারাবাংলাদেশে এই বিভাগে কোন পদ খালি নেই। উক্ত কলেজ থেকে যদি জানানো হয় যে তাদের পদ খালি রয়েছে বা লিখিতভাবে আবেদন করা হয় শিক্ষক সংকট আমরা নিশ্চয়ই শূণ্য পদে নিয়োগ দিবো। সেটা সারা বাংলাদেশের যেকোন কলেজেই হোক।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক(সাধারণ প্রশাসন) বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, পদ সৃষ্টি না হওয়ার পেছনে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। মাউশি কেবল আবেদন গুলো ফরোয়ার্ড করে দেয় । মাউশির কিছুই করতে হয় না। এটা আসলে জটিল কাজ। ৩টা মন্ত্রণালয়ের সম্মিলিত কাজ। মাউশি থেকে শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও এরপর জনপ্রশাসন এ আবেদন পাঠাতে হয়। তবে অধ্যক্ষদের এ নিয়ে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। অধ্যক্ষদের আন্তরিকতা থাকলে পদ সৃষ্টি সহজ হয়।