ঢাকা শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

বৈকালিক চিকিৎসায় সাড়া মিলেছে আড়াইহাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে


নিউজ ডেস্ক
৪:০৯ - বুধবার, মে ১০, ২০২৩
বৈকালিক চিকিৎসায় সাড়া মিলেছে আড়াইহাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে

সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু আছে প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস বা বৈকালিক চিকিৎসা সেবা। একই সঙ্গে বৈকালিক চেম্বারে চিকিৎসা সেবায় উপজেলা পর্যায়ে প্রথম সারিতে আছে এ হাসপাতাল। এ পর্যন্ত ৮৪৫ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। যা সারাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

এর আগে ৩০ মার্চ সচিবালয় থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাইলট প্রকল্প হিসেবে বৈকালিক চেম্বার উদ্বোধনের পরই আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবার উদ্বোধন করা হয়। সেদিন থেকে সরকারি ছুটির দিন বাদে প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এক্ষেত্রে কনসালট্যান্ট চিকিৎসক ফি ৩০০ টাকা এবং এমবিবিএস চিকিৎসক ফি ধরা হয়েছে ২০০ টাকা। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে এ চিকিৎসাসেবা চালু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ জন করে সেবা নিচ্ছেন। কোনো কোনো দিন আবার রোগীর সংখ্যা ৫০ জন ছাড়িয়ে যায়।

হাসপাতালের ডাক্তাররা বলছেন, চিকিৎসাসেবা তখনই সফল বলা যায় যখন একজন রোগী দ্বিতীয়বার এসে একই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এটা চলমান আছে। একজন রোগী এখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠছেন।

এদিকে হাসপাতালে বৈকালিক চিকিৎসা নিতে আসা রোগী বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষজন সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে তারা অনেক খুশি হয়েছেন। তারা এটাকে কম টাকায় সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট হাসপাতালের চিকিৎসা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। চিকিৎসা নিতে আসা প্রত্যেকেই দীর্ঘ সময় নিয়ে ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন।

চিকিৎসা নিতে আসা কলেজছাত্র মাসুম বলেন, আমি বৈকালিক চেম্বারে ভালো চিকিৎসাসেবা পেয়েছি। ডাক্তাররা আমাকে চিকিৎসার বিষয়ে ভালো পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের পরামর্শে আমি ওষুধ খেয়ে সুস্থ হওয়ার পথে।

মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমার এখানে প্যাথলজি পরীক্ষাগুলো হয়ে থাকে। আমরা বৈকালিক চেম্বারে বেশ সাড়া পাচ্ছি। প্রতিদিনই ছয়-আটজন রোগীর পরীক্ষা করতে হচ্ছে। রোগী বেশি এলে আমাদের এখানে পরীক্ষার সংখ্যাও বাড়ে। এভাবে রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

উপজেলা কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. উত্তম কুমার দাশ গুপ্ত বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে জনসাধারণের জন্য বৈকালিক চেম্বারে যারা আসছে তাদের অনেক উপকার হচ্ছে। একমাস পর বলতে পারি আমরা অনেকটাই সফল হয়েছি। গত এক মাসের মধ্যে সারাদেশের মধ্যে আমরা সর্বোচ্চ রোগীর সেবা দিয়েছি। গত মাসে আমাদের বৈকালিক চেম্বার থেকে ৬০৮ জন রোগীর সেবা নিয়েছে।

মেডিকেল কর্মকর্তা আরও বলেন, আমাদের বৈকালিক চেম্বার অনেকটাই সফল। এখানে নিয়মিত কনসালট্যান্ট চিকিৎসক এবং মেডিকেল কর্মকর্তা নিয়মিত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়মা আফরোজ বলেন, বৈকালিক চেম্বারের মাধ্যমে আমরা প্রান্তিক পর্যায়ে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি। মানুষজন এখন সরকারি হাসপাতালমুখী হচ্ছে। তারা এসে এখন সেবা নিচ্ছেন। আমরা সেবায় সফল হয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এখানে প্রতিদিন তিনজন চিকিৎসক সেবা দিচ্ছেন। কোনদিন একজন কনসালট্যান্ট এবং দুজন মেডিকেল কর্মকর্তা আবার কোনদিন দুজন কনসালট্যান্ট এবং একজন মেডিকেল কর্মকর্তা থাকছেন। বৈকালিক চেম্বার চালু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৮৪৫ জন রোগী সেবা নিয়েছেন।

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মোহাম্মদ মুশিউর রহমান বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে দেশে ১০ টি জেলায় এবং ২০টি উপজেলায় সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় চালু হয়েছিল। এ চিকিৎসাসেবা চালুর পর থেকেই আমরা বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। গত একমাসে বৈকালিক চেম্বারের মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি রোগীর সেবা দেওয়া হয়েছে।