সর্বকালের সেরা ফুটবল ম্যানেজারদের তালিকা করা হলে নিঃসন্দেহে সেখানে কার্লো আনচেলত্তির নাম ওপরের দিকেই থাকবে। ১৯৫৯ সালের ১০ জুন ইতালির রেজ্জিওলোতে জন্ম নেয়া প্রথিতযশা এই ফুটবল
ব্যক্তিত্বকে মজা করে ভক্তরা ‘ডন কার্লো’ নামে ডাকেন। এসি মিলান, রোমা ও ইতালির জাতীয় দলের মিডফিল্ডার হিসেবে তিনি তার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার শেষ করেন। যদিও বেশিরভাগ ফুটবল বিশেষজ্ঞের মতে, ম্যানেজার হিসেবে তার অনবদ্য ক্যারিয়ারের কারণেই তিনি ফুটবল বিশ্বের সেরাদের মাঝে স্থান করে নিয়েছেন।
১৯৯৫ সালে রেজ্জিনা’র প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন আনচেলত্তি। এরপর তিনি পারমা, জুভেন্টাস, এসি মিলান, চেলসি, প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইন, বায়ার্ন মিউনিখ ও নাপোলি’র মতো ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় ক্লাবগুলোতে দায়িত্ব পালন করেন। এসমস্ত ক্লাবের হয়ে তিনবার উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জয় সহ বিভিন্ন ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক শিরোপা জয়ে ভূমিকা রাখেন তিনি। তবে, স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরই আনচেলত্তির ক্যারিয়ারের সেরা অধ্যায় রচিত হয়। ২০১৩ সালে ‘রিয়াল মাদ্রিদ ক্লাব দে ফুটবল’ এর প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব পান আনচেলত্তি। তার অধীনে প্রথম মৌসুমেই ১০ম ইউরোপিয়ান ক্লাব বা উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে জয়ের স্বাদ পায় স্প্যানিশ দলটি।
এরপর তার অধীনে রিয়াল মাদ্রিদ কোপা দেল রে, উয়েফা সুপার কাপ, ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ সহ আরও বেশ কিছু শিরোপা জয় করে। আনচেলত্তির অধীনে রিয়াল মাদ্রিদের জয়জয়কার সারা ফুটবল বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
রিয়াল মাদ্রিদ, বায়ার্ন মিউনিখ, চেলসি, নাপোলি ও এসি মিলান - ২০২২-২৩ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করা ৮টি দলের ৫টিতেই ক্যারিয়ারের কোনো না কোনো সময় কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন আনচেলত্তি। এ থেকেই বোঝা যায়, বিশ্বমানের দল নির্মাণ ও পরিচালনার ক্ষেত্রে এই ইতালিয়’র জুড়ি মেলা ভার। সবসময় সিরিয়াস চেহারা করে রাখা এই কিংবদন্তী একবার কৌতুকচ্ছলে বলেছিলেন, “বিশ্বের সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ফুটবল”।
বিশ্বের যেকোনো দেশের সেরা ফুটবল দল, লীগ ও ফুটবলার-ম্যানেজারদের সবরকম নিউজ ও আপডেট পেতে ঘুরে আসুন পারিম্যাচ নিউজ এ। দ্বিতীয় দফায় লস ব্লাঙ্কোসদের দায়িত্ব নেয়ার পর, রীতিমতো ইতিহাস গড়ে নিজের সাফল্যের ধারাকে আরও এগিয়ে নেয়ার সুযোগ এসেছে এবারে আনচেলত্তির সামনে। দলটি বর্তমানে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে রয়েছে; আর নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, রিয়াল মাদ্রিদের ১৫তম ইউরোপিয়ান শিরোপা জয়ই ডন কার্লোর লক্ষ্য। সফল ফুটবলার হিসেবে যাত্রা শুরু করার পর ম্যানেজার হিসেবে আনচেলত্তির ব্যাপক সফলতা, সকল ক্রীড়ামোদীর সামনে একটি চিত্রই উপস্থাপন করে; আর তা হচ্ছে - এই ১২০ গজের সবকিছুই পুরোপুরি তার নখদর্পণে রয়েছে। ইউরোপে ও ঘরোয়াভাবে তার দলগুলোর অসামান্য সফলতা আর প্রত্যেক দলের জন্য ভিন্ন ভিন্ন কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলো পরিচালনা করার দক্ষতার মধ্য দিয়ে ক্লাব ফুটবলের ইতিহাসে অমোচনীয় সাফল্যগাথা তৈরি করেছেন আনচেলত্তি। রিয়াল মাদ্রিদের অর্জনগুলো থেকে ম্যানেজার হিসেবে তার অসাধারণ প্রতিভার প্রমাণ পাওয়া যায়। তিনি কি এবারও তার
সফলতার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারবেন? পারবেন কি, নিজ খ্যাতি ও গৌরবকে নতুন এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে? উত্তর পেতে পারিম্যাচ নিউজের সাথেই থাকুন!
ইস্তাম্বুলের যাত্রীদের হাতে টিকেট তুলে দেয়ার যে এখনো একটু বাকি!