ঢাকা বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাত অব্যাহত


নিউজ ডেস্ক
১১:৪৫ - বৃহস্পতিবার, আগস্ট ১১, ২০২২
দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাত অব্যাহত

টানা তিন দিনের বৃষ্টিপাতে নাকাল বরিশালবাসী। প্রতিদিন ভোররাত থেকে দিন পার হয়ে মধ্যরাত অবধি থেমে থেমে বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন মানুষ। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আরও তিন দিন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এই সময়ে ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিকেল ৩টার বুলেটিনে এমন তথ্য জানিয়েছে বরিশাল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র উচ্চ পর্যবেক্ষক মাসুদ রানা রুবেল। 

তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় দ্বিগুনের কাছাকাছি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড করা হয়েছিল ২৪ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। তবে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় তা বেড়ে ৪৫ মিলিমিটারে দাঁড়িয়েছে। এই সময়ে বাতাসের আদ্রতা ছিল ১০০ শতাংশ। বাতাসের গতিবেগ রয়েছে ১৫ কিলোমিটার।

এই কর্মকর্তা বলেন, বাতাসের গতিবেগ বেড়ে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিতে প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মূলত বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ বিদ্যমান থাকায় এবং বাংলাদেশের ওপর মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় আবহাওয়া তৈরী হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা বরিশাল ও এর উপকূলে বায়ুচাপের তারতম্যের কারণে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময়ে স্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় ২ থেকে সর্বোচ্চ ৪ ফুট উচ্চতায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। সেই সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে।

মাসুদ রানা রুবেল বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে নদী ও সাগরের সব নৌ-যানকে তীরে নোঙর করে থাকতে বলা হয়েছে। সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত এবং নদী বন্দরকে ২ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল নগরীর বর্ধিতাংশ পানিতে প্লাবিত হয়েছে। শহরের অনেক অংশে ঢুকে পড়েছে জোয়ারের পানি। এ ছাড়া জেলার সবগুলো উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে কর্মস্থলমুখী মানুষ ও দিনমজুর পড়েছেন বিপাকে।

বাবুগঞ্জের রহমতপুরে কথা হয় আব্দুর রশিদের সঙ্গে। তিনি জানান, গত তিন দিন ধরে তার সবজির ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ক্রেতা আসছে না বাজারে।

বরিশাল নগরীর পলাশপুরের বাসিন্দা রোজিনা আক্তার বলেন, বর্ষা এলেই এই এলাকার অধিকাংশ ঘরবাড়ি জোয়ারে ডোবে ভাটায় শুকায়। বিগত বছর মানানসই ভোগান্তি থাকলেও এবার কয়েকদিন ধরে কোনো নিস্তার পাচ্ছি না। 

চরকাউয়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আনসার দালাল বলেন, আমাদের বাড়িঘর অধিকাংশ কীর্তনখোলার ভাঙনে নিয়ে গেছে। এবার যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে আতঙ্কে আছি কখন বাকি অংশটুকুও বিলিন হয়ে যায়।

এ ছাড়া, ভোলা, বরগুনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং টানা বর্ষণে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে রয়েছে জেলার মানুষ। শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারছে না। ইতোমধ্যে অনেক জেলার সড়ক, মাছের ঘের, ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। একই চিত্র ঝালকাঠি জেলায়। সর্বশেষ বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বিভাগের সবগুলো নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি না হলেও এতে ফসল, মাছ চাষি এবং উপকূলের মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হবে।