‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক...’ - এই বাক্যকে তালবিয়া বলা হয়। তালবিয়া পাঠের মধ্য দিয়েই হজ ও ওমরায় প্রবেশের ঘোষণা দেয়া হয়। তাই একে হজ-ওমরার শ্লোগান হিসেবে অভিহিত করা হয়। তালবিয়া পাঠ আল্লাহ তায়ালার তাওহিদ বা একত্ববাদ চর্চার দৃশ্যমান ইবাদত ও আমল।
হজরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তালবিয়াতে স্বর উঁচু করার জন্য জিবরাইল আ. আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ এটি হজের বিশেষ শ্লোগান।’ -(ইবন খুযাইমাহ, ২৬৩০)
আরেক হাদিসে জায়েদ ইবনে খালিদ জুহানী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘জিবরাইল আ. আমার কাছে আসলেন অতঃপর বললেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন, যেন আপনি আপনার সাথীদেরকে নির্দেশ প্রদান করেন যে, তারা যেন তালবিয়া দ্বারা স্বর উঁচু করে। কারণ এটি হজের শ্লোগানভুক্ত।’ (তাবরানী : ৫১৭২)
এছাড়া তালবিয়া পাঠ হজ-ওমরার শোভা বৃদ্ধি করে বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘অমুকের ওপর আল্লাহর অভিশাপ! তারা ইচ্ছা করে হজের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিনের শোভা মিটিয়ে দিল। আর নিশ্চয় হজের শোভা হল তালবিয়া।’ -(মুসনাদ আহমদ, ১/২১৭)
তালবিয়া কখন পড়তে হয়...
হাজিরা হজের ইহরাম বাঁধার সময় থেকে জামরাতুল ‘আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সার্বক্ষণিক তালবিয়া বলবেন- ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লা শারীকা লাকা লাব্বাইক...’। তবে কঙ্কর নিক্ষেপের আগ মুহূর্তে তালবিয়া পাঠ বন্ধ করবে। আর ওমরাপালনকারী ইমরাম বাঁধার পর থেকে তালবিয়া পাঠ শুরু করবে এবং বায়তুল্লায় তাওয়াফ শুরু করার আগে তালবিয়া পাঠ বন্ধ করবে।
হজ ও ওমরায় পুরুষ-মহিলা সবার ক্ষেত্রেই তালবিয়া পাঠ ও অন্যান্য জিকিরের গুরুত্ব সমান। পার্থক্য এতটুকু যে, মহিলারা পুরুষের মত উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করবেন না। নিজে শুনতে পারে এতটুকু আওয়াজে মহিলারা তালবিয়া পাঠ করবেন।
তালবিয়া পাঠ হজ-ওমরার শোভা বৃদ্ধি করে বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘অমুকের ওপর আল্লাহর অভিশাপ! তারা ইচ্ছা করে হজের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিনের শোভা মিটিয়ে দিল। আর নিশ্চয় হজের শোভা হল তালবিয়া।’
এ বিষয়ে ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জামরাতুল ‘আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপ না করা পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করতেন।’ -(বুখারী, ১৫৪৪; মুসলিম, ১২৮১)
তালবিয়া পুরোটা পাঠ করতে হয়। কিছু অংশ ছেড়ে দেওয়া মাকরূহ। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, তালবিয়া শেষ পর্যন্ত পাঠ করো। কেননা এটি রাসুল (সা.)-এর তালবিয়া। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং: ১৩৬৩৮)
তালবিয়া ও তালবিয়ার উচ্চারণ
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুল (সা.)-এর তালবিয়া হলো-
আরবি :
لَبَّيْكَ اَللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لا شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لا شَرِيْكَ لَكَ
উচ্চারণ : লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।
অর্থ : আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি, হে আল্লাহ! আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি। আমি আাপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি, আপনার কোন শরীক নেই, আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি। নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা, নে‘মত এবং সাম্রাজ্য আপনারই। আপনার কোনো শরিক নেই। (বুখারি, হাদিস : ১৫৪৯; মুসলিম, হাদিস : ২৮১১)