ঢাকা বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

মুসাইব হাসান সায়ীদ'র তিনটি কবিতা


নিউজ ডেস্ক
৬:৫৬ - বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪
মুসাইব হাসান সায়ীদ'র তিনটি কবিতা

জীবন বৃত্তান্ত


দশ বছর পরের একটা গল্প 

আমাকে তাড়া করে, পায়ে পায়ে ঘুরে বেড়ায়,

হানা দেয় দুঃস্বপ্নের রাতে।

অথচ কয়েক বছর আগে এমন গল্প ছিড়ে পেলেছি !


পাখিদের ডানা আছে বলেই তারা পরাধীন!

মানু‌ষের মুখ আছে বলেই তারা পরাধীন!

আকাশের সীমানা ছোট বলেই আকাশ সবার !

যেহেতু মানুষ দুঃখ বিলাসী এইজন্য নদী নীরব !


বিশ বছর পরের একটা গল্প

আমাকে সাত বছর বয়সে নিয়ে যেতে চায়

মক্তবে "আলিফ বা তা শিখায় মাখরাজের ভাষায়

নেশা ধরায় লাটিম খেলায়।

অথচ ,কয়েক দিন আগে গল্প লিখেছি কতো হেলায়।


বাতাশ অনুভব করা যায় বলেই বাতাস সবার

বৃক্ষ প্রতিজ্ঞাবান বলেই বৃক্ষ মাটির প্রেমিক 

সাগর ঢেউ দেয় বলেই সাগর চিরো যুবতী

যেহেতু সময় একটা ধারনা এইজন্য ঘড়ি প্রহসন।


চল্লিশ বছর পরের একটা গল্প 

আমাকে একাকিত্বের বর্ননা শেখায় পুরাণ থেকে

ইশ্বরের ঘুহায় আত্ম গোপন করায়।

অথচ! কিছু দিন পর আমি জানবো ইশ্বরের বানী 



নারীর আয়ুর্বেদিক দুঃখ আছে বলেই তারা মা ।

নারী মাকরসার সহজাত বলেই তারা প্রেমিকা।

মেঘের নিজস্ব বাড়ী নেই বলে মেঘ একটা সাতারু।


দুঃসাহস অথবা সম্ভাবনা 


আধুনিক মেসেঞ্জার ,হোয়াটসঅ্যাপ,ফেইজবুকের নিচে 

চাপা পড়ে যাচ্ছে আমার সময়,আমার ভালোবাসা।

ডান হাতে এক গ্লাস গাঢ় লাল দীর্ঘশ্বাস

বাম হাতে করুণ এক ধোঁয়াশে নিঃশ্বাস ।


বহুকাল একা আমি আরো একা হয়ে যাচ্ছি 

আমার ছায়া আমার সঙ্গে  অস্পষ্ট হচ্ছে ।


তাই চলে যাচ্ছি,নগর সভ্যতায় অস্পষ্ট হিসাব কষে 

রাষ্ট্র প্রধানের কাছে জমা দিবো প্রতারক সময় 

দিগন্ত রেখায় মেলে ধরবো প্রেমহীন প্রজন্মের ইতিহাস।


তারপর চলে যাবো ভোল্গা নদীর তীর ছুঁয়ে

অষ্টাদশী প্রেমিকার একান্ত মায়ার সমীকরণ শিখতে

পদ্ম ভোজীদের কাছে গত জন্মের স্মৃতি জমা দিয়ে

সারনদের গান শুনে কিছুক্ষণ ঘুমাবো সমুদ্র স্নানে ।


তারপর আমি চলে যাবো আদিম সভ্যতার শুরুতে

যেখানে দিগন্ত জুড়ে সবুজের জলরাশি। 

আবিস্কার হয়নি অহংকার ঘৃণা আর প্রতারণা 

স্মৃতির সড়ক এখনো পায়নি শূন্যেতার ধারনা ।


অবশেষে খুজে নিবো সভ্যতার অনাবিষ্কৃত

প্রেমের বিশাল ভান্ডার

এবং পৃথিবীর বুকে পাঠিয়ে দিবো প্রেম এবং

স্নিগ্ধ মায়ার বৃষ্টিপাত ।



ভালোবাসা অথবা অবহেলা 

প্রিয়তমা তুমি আমায় একটি চার অক্ষরের শব্দ দাও

আমি তোমায় কিনে দিবো,আইসল্যান্ড, ডেনমার্ক আর প্যারিস শহর,

হাতের মুঠোয় এনে দেবো পৃথিবীর সব জাফরান ক্রোকাস ,

সিম্পনি অফ দ্যা সিস হবে তোমার সমুদ্র যাত্রার ক্ষুদ্রতম জাহাজ ।


প্রিয়তমা তুমি আমায় সোনালী রঙের একটি দুঃখ দাও

তোমায় সামান্য তৃষ্ণায় এনে দিবো, নীল নদের সব জল

তোমার আয়ুর রেখায় বসিয়ে দিবো একের পর তিনটা শূন্য।

হিসাবের কাঠগড়ায় সময় কখনো তোমার থেকে পলাতক হবেনা,

কচুরিপাতায় তুমি অনায়াসে জমা করতে পারবে পাতলা জল।


প্রিয়তমা তুমি আমায় বেদনায় মুখরিত একটি সন্ধ্যা দাও

ভরা পূর্ণিমা আর জোৎস্নার রং মেখে দিবো তোমার শরীরে

আলোকবর্ষ ধরে চাদঁ কে নিয়ে লেখা সুরের মোড়ক উম্মোচন করবো

পাথরের বুকে জন্ম দিবো গত জন্মে ঝরে যাওয়া সব হাসনাহেনা।

এই পুঁজিবাদী প্রেম হত্যা করে তোমায় দিবো মায়াময় সভ্যতা।


প্রিয়তমা তুমি আমায় একটা গাঢ় আলিঙ্গন দাও

আমি তোমায় কিনে দিবো তিন প্রহরের সব পদ্মফুল

যাতে তুমি অনায়াসে ভুলে যাও গত জন্মের আমিহীন সব স্মৃতি

অনন্ত দিগন্তের সংজ্ঞা বদলে যায়গা দিবো নতুন আকাশের আকাশ।

হলুদ মাছরাঙা শেষ মাছটার জন্য অপেক্ষা করবে প্রেম নিয়ে।


তুমি আমায় চার অক্ষরের একটি চিরকুট দাও

আমি এই সভ্যতা থেকে মুছে দেবো ভার্চুয়াল প্রেম ভার্চুয়াল সঙ্গম

আর এই ছয় ইঞ্চি ডিসপ্লের অসংগতিময় গল্পের অপব্যবহার 


তুমি আমায় একটা চার অক্ষরময় অষ্টাদশী ছোঁয়া দাও

আমি শূন্যতাকে ধর্মান্তরিত করে ফুলে পরিনত করবো

নদীকে করে দিবো সাগর আর সাগর কে মহাসাগর 


প্রিয়তমা তুমি আমায় একটি চার অক্ষরের শব্দ দাও

আমি হাসি মুখে লিখে দিবো একজন কবির সুখময় জীবন

বদলে দিবো ভালোবাসার সুন্দরতম প্রতিশব্দ প্রয়োজন!