রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে ১০ দফা দাবি
জানিয়েছে ঢাকা কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। যেখানে ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের
ডিসি, এডিসি ও নিউমার্কেট থানার ওসিকে প্রত্যাহারের দাবি তোলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) রাত ১২টায় ঢাকা কলেজের শহীদ আ. ন. ম. নজীব উদ্দিন
খান খুররম অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে তারা এসব দাবি জানান।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন কথা বলেন, ঢাকা কলেজের
স্নাতকোত্তর শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুজয় বালা ও মাসুম বিল্লাহ।
শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই ঢাকা কলেজ বাঙালি এবং ছাত্র সমাজের নৈতিক ও যৌক্তিক প্রয়োজনে সবসময় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাঙালির স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনেও সম্মুখ ভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে জীবন উৎসর্গ করেছে দেশের জন্য। সম্প্রতি পুলিশ প্রশাসন ও ব্যবসায়ীরা এই ঐতিহ্যবাহী কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যে আচরণ করেছে এটি নোংরামির চরম মাত্রা অতিক্রম করেছে।
সাম্প্রতিক ঘটনার বিবরণে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘সোমবার দিবাগত রাত ১২টায় নিউ মার্কেটের ওয়েলকাম এবং ক্যাপিটাল ফাস্টফুড দোকানের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজের দুই শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করা হয়। খবরটি ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে কলেজের সামনের মিরপুর সড়কে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানান। সেখান থেকে ক্যাম্পাসে ফিরে আসার সময় নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও হকাররা শিক্ষার্থীদের নামে গুজব ছড়িয়ে একযোগে হামলা চালান।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের হামলার পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। ডিএমপির রমনা জোনের এডিসি হারুন-অর-রশিদ ও নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স.ম. কাইয়ুম ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করেই ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে বিতর্কিত ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।’ সকল ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হচ্ছে—
১. এই ন্যক্কারজনক হামলার উস্কানিদাতা, ইন্ধনদাতা ও হামলাকারীদের তদন্ত সাপেক্ষে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ২. আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সব দায়ভার নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিতে হবে।
৩. হকারদের হামলায় নিহত পথচারী নাহিদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ৪. রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
৫. দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ডিসি, এডিসি ও নিউ মার্কেট থানার ওসিকে প্রত্যাহার করতে হবে এবং পুলিশ প্রশাসনকে কলেজ প্রশাসনের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। ৬. প্রতিটি মার্কেট ও দোকানে সিসিটিভি স্থাপন করতে হবে।
৭. প্রতিটি মার্কেটে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আচরণ বিধি প্রণয়ন ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন। ৮. ফুটপাত দখলমুক্ত, অবৈধ কার পার্কিং উচ্ছেদ ও চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।
৯. ক্রেতা হয়রানি, নারীদের যৌন হয়রানি বন্ধে একটি বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করে ক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ১০. চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট ও নিউ সুপার মার্কেটে ঢাকা কলেজের সম্পদ লিজ বাতিল করে ফিরিয়ে দিতে হবে। এসব দাবি অনতিবিলম্বে কার্যকর করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান শিক্ষার্থীরা।