আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশের লেখক লিজি রহমান। আমেরিকার মূলধারার রাজনীতি নিয়ে নিয়মিত লেখেন দেশ বিদেশের বিভিন্ন পত্রিকায়। আমেরিকার রাজনীতি ও মানুষের যাপিত জীবনের গল্প নিয়ে তাঁর লেখা অনেক বই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২৩ এ প্রকাশিত হয়েছে লিজি রহমানের নতুন বই- আমেরিকায় বাঙালির চাষবাস।
৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুর- ২ টায় জাতীয় জাদুঘরের সিনেপ্লেক্স হলে বইটির প্রকাশনা উৎসব আয়োজন করা হয়।
প্রকাশনা উৎসবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কবি, গীতিকার ও প্রবীণ সাংবাদিক নাসির আহমেদ, ছড়াকার আবু সালেহ, সাহিত্যিক - দিলারা মেসবাহ, মোবাশ্বেরা খানম বুশরা, কৃষিবিদ ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রমূখ। এছাড়া শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন লেখক লিজি রহমানের শুভানুধ্যায়ী ইংল্যান্ড প্রবাসী ড. নাজমা কবির এবং সাহিদা ইসলাম। কৃষিবিদ ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম "আমেরিকায় বাঙালির চাষবাস" বইটির ভূমিকা লিখেছেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে জানান বাংলাদেশের কৃষকেরা জীবিকার তাগিদে কৃষিকাজ করেন। কৃষিতে যে পরিমাণ গবেষণা ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার হওয়া প্রয়োজন তার উপস্থিতি বাংলাদেশের কৃষি খাতে নেই। কিন্তু লিজি রহমান সুদূর আমেরিকার মাটিতে সেখানের বৈরি আবহাওয়ায় থেকে বাংলাদেশের শাকসবজি চাষ করছেন। বক্তারা তাদের বক্তব্যে লিজি রহমানের সাহিত্য চর্চা ও সামাজিক কাজের উপর আলোকপাত করেন। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশীদের নিয়ে কমিউনিটি তৈরি করে গাছ লাগানো, সামাজিক ও মানবিক কাজে নিয়মিত অংশগ্রহণ করেন। সমাপনী বক্তব্যে লিজি রহমান জানান তার বাগান করা আর আমেরিকায় তার গাছ লাগানো নিয়ে করা গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে তিনি বইটি লিখেছেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন- কবি, সম্পাদক ও সঙ্গীতশিল্পী হাসান মাহমুদ।
কৈশোর থেকে লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত লিজি রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। নিউ ইয়র্কের কুইন্স কলেজ থেকে এডুকেশনে মাস্টার্স করেন। এরপর নিউ ইয়র্কের পাবলিক স্কুলে শিক্ষকতা করেন।
লিজি রহমানের লেখা ও প্রকাশিত বই- ওহ! আমেরিকা, কিশোর চোখে মুক্তিযুদ্ধ, আমেরিকার ক্রান্তিকাল ও ডোনাল্ড ট্রাম্প, রংধনুর দেশ ও শোক ভুলতে পথে। তাঁর সম্পাদিত বই- স্মৃতির বাতায়নে চাঁদের হাট, উতল মেঘের কাল, থ্রু দ্য রাইমস।
লেখালেখি ছাড়াও নিউ ইয়র্কে রাজপথে প্রতিবাদী কণ্ঠ লিজি রহমান। নিউ ইয়র্কে সড়ক নিরাপত্তা বিধানের কাজে জড়িত। ২০০৮ সালে তাঁর বড় ছেলে আসিফ রহমানকে এক সড়ক দুর্ঘটনায় হারানোর পর তিনি নিউ ইয়র্কে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সাথে যুক্ত হন। যৌক্তিক আন্দোলনের ফলে নিউ-ইয়র্কে তাঁর ছেলে আসিফ রহমানের নামে বাইক লেন করা হয়েছে। বাইক লেন এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিউ ইয়র্কের সাবেক মেয়র ডিব্লাজিও বলেন- 'লিজি নিজের শোককে মানুষের কল্যাণে উৎসর্গ করে অনন্য হয়ে গেলেন।'