ঢাকা শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

ভয়াবহ বন্যায় ৪ হাজার মানুষের মৃত্যু, লিবিয়ায় ১২ কর্মকর্তার জেল


নিউজ ডেস্ক
১৪:৫৯ - রবিবার, জুলাই ২৮, ২০২৪
ভয়াবহ বন্যায় ৪ হাজার মানুষের মৃত্যু, লিবিয়ায় ১২ কর্মকর্তার জেল

উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায় ১২ জন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বিপর্যয়কর বাঁধ ধসের পর প্রাণঘাতী বন্যার পেছনে তাদের ভূমিকার কারণে এই কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

গত বছরের সেপ্টম্বরের সেই বন্যায় ৪ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। রোববার (২৮ জুলাই) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রাণঘাতী বন্যায় ৪ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যাওয়ার ঘটনায় বিপর্যয়কর বাঁধ ধসের পেছনে তাদের ভূমিকার জন্য লিবিয়ার ১২ জন কর্মকর্তাকে ৯ থেকে ২৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

গত বছরের সেই বন্যার সময় দেরনা শহরের আশপাশের সমস্ত এলাকা ভেসে গিয়েছিল এবং মানুষজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছিল। দোষী সাব্যস্ত এসব কর্মকর্তা পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল।

অন্যদিকে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সাজাপ্রাপ্ত এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবহেলা, পূর্বপরিকল্পিত হত্যা এবং জনসাধারণের অর্থ অপচয়সহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে তিনজনকে অবৈধ উপায়ে প্রাপ্ত অর্থ ফেরত দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে পাবলিক প্রসিকিউটরের কার্যালয় জানিয়েছে।

অবশ্য বিচারাধীন অন্য চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লিবিয়ায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের সময় দুর্বল রক্ষণাবেক্ষণ এবং শাসন ব্যবস্থার কারণে এসব বাঁধ আংশিকভাবে অচল হয়ে পড়েছিল।

দেরনায় সেই বিপর্যয়কর বন্যার এক সপ্তাহ পরে ক্ষিপ্ত বাসিন্দারা সেখানকার মেয়রের বাড়িও পুড়িয়ে দেয়, সেসময় তারা এই বন্যার ঘটনার ব্যাখ্যাও দাবি করে। এছাড়া পুরো সিটি কাউন্সিলও বরখাস্ত করা হয়।

বন্যার পরের দিনগুলোতে বাসিন্দারা বিবিসি আরবিকে বলেছিলেন, বন্যার পর দেরনার ভুল অংশে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন আদেশ দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া স্থানান্তরিত ব্যক্তিদের কোথায় আশ্রয় দেওয়া উচিত তার জন্য কোনও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়নি। এছাড়া কিছু মানুষকে বাড়িতে থাকার আদেশ দেওয়া হয়েছিল এবং কোথাও কোথাও কারফিউও জারি করা হয়েছিল। যা দুর্যোগের সময় ছিল একে অপরের বিপরীত নির্দেশনা।

স্থানীয়রা বিবিসিকে আরও জানিয়েছেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির আশঙ্কায় কিছু লোককে সমুদ্র উপকূল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল এবং সেসব মানুষকে আরও বিপজ্জনক এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয় যেখানে পরবর্তীতে বন্যার মুখে পড়তে হয়েছিল তাদের।

মূলত ঝড় ড্যানিয়েলের কারণে সেসময় ২৪ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে লিবিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূলের কিছু অংশে ৪০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছিল। এটি লিবিয়ার এই অঞ্চলের জন্য ছিল অসাধারণ এক প্রলয়। কারণ সাধারণত পুরো সেপ্টেম্বর জুড়ে দেশটির এই অঞ্চলে প্রায় ১.৫ মিমি বৃষ্টিপাত দেখা যায়।

লিবিয়ার জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র সেসময় জানিয়েছিল, বৃষ্টিপাত নতুন রেকর্ড গড়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালে সামরিক জোট ন্যাটো-সমর্থিত বিদ্রোহের পর থেকে লিবিয়ার দীর্ঘদিনের নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত ও হত্যা করা হয়। দীর্ঘদিনের নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে লিবিয়া ক্ষমতার লড়াইয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে এবং দেশটিতে বর্তমানে দুটি সরকার রয়েছে।

যার একটি রাজধানী ত্রিপোলি-ভিত্তিক জাতিসংঘ-স্বীকৃত সরকার এবং অন্যটি যুদ্ধবাজ জেনারেল খলিফা হাফতার সমর্থিত দেশটির পূর্বে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।