সরকারি তিতুমীর কলেজ ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান নাঈমের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, জার্সি তৈরির কথা বলে ২০২৪ সালের নভেম্বরের দিকে ক্লাবের বেশ কয়েকজন সদস্যের থেকে ৩৭০ টাকা করে নেওয়া হয়। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও জার্সি বানানো হয়নি কিংবা কারো টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠে।
ভুক্তভোগীরা জানান, টাকা নেওয়ার পর নাঈম বারবার সময়ক্ষেপণ করছেন এবং বিভিন্ন অজুহাতে জার্সি বানানোর প্রক্রিয়া পিছিয়ে দিয়েছেন। জার্সির টাকা ফেরত চাইলেও তিনি বিভিন্নভাবে বিষয়টি এড়িয়ে গেছে।
একাধিক ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টাকা নেওয়ার পর সভাপতি জহিদ হাসান নাঈম বারবার অজুহাত দেখিয়ে সময়ক্ষেপণ করছেন। তারা জানান, এখনও কেউ জার্সি পাননি, টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি।
ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বলেন, ২০২৪ সালে নভেম্বর মাসে ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতি নাঈমকে আমরা বেশ কয়েকজন জার্সির জন্য টাকা দিয়েছিলাম। জনপ্রতি ৩৭০ টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে জার্সির ব্যাপারে জানতে চাইলে, তিনি একের পর এক অজুহাত দিতে শুরু করেন। এভাবে এক বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রাজু জানান, আমি ক্রিকেট ক্লাবের জার্সি বানানোর জন্য নাঈমকে ৩৭০ টাকা দিয়েছিলাম। এর কিছুদিন পর জার্সি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। এরপর আমি বেশ কয়েকবার এ বিষয়ে তাকে মেসেজ দিয়েছি, কিন্তু তিনি নানা তালবাহানা করেন। এক পর্যায়ে আমি টাকা ফেরত চাইলে তখনও তিনি বলেন, আজ দেব, কাল দেব। এভাবে করতে করতে এক বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে। সম্প্রতি এই টাকার বিষয়ে তার একটি ফেসবুক পোস্টে কমেন্ট করলে, তিনি ইনবক্সে আমার সাথে অশোভন আচরণ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিতুমীর কলেজ ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান নাঈম জানান, জার্সির জন্য যারা টাকা দিয়েছিল তাদের টাকা ক্লাবের ফান্ডে জমা করা হয়। কিন্তু তখন কিছু প্রোগ্রাম আয়োজনের কারণে ফান্ড কম থাকায় জার্সির টাকা ব্যবহার করা হয়। ফলে জার্সি তৈরি করা সম্ভব হয়নি। যারা টাকা দিয়েছেন তাদের ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই প্রায় ৯৫ শতাংশ টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ক্লাবের ফান্ড নেই, তাই বাকি টাকা ফেরত দিতে আমার নিজস্ব অর্থ ব্যবহার করতে হচ্ছে। বাকি শিক্ষার্থীদেরও অতি দ্রুত টাকা ফেরত দেওয়া হবে। তিতুমীর কলেজ ক্রিকেট ক্লাব সবসময় স্বচ্ছতার মান বজায় রেখেছে এবং ভবিষ্যতেও রাখবে।
টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে ক্রিকেট ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আলিম আল রেজওয়ান বলেন, আমি ক্লাবে খুব বেশি সময় দিতে পারি না। সভাপতি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। তাই এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।
এই বিষয়ে ক্রিকেট ক্লাবের উপদেষ্টা ও কলেজের শরীরচর্চা শিক্ষক মো. সামসুদ্দিন বলেন, আমি এ সম্পর্কে কিছু জানি না। তবে যেহেতু এটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের টাকা, তাই অবশ্যই তাদের টাকা ফেরত দিতে হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে।