তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি:: বাংলা কলেজের এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগে অভিযুক্ত নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমাম হাসান শুভকে তিতুমীর কলেজের একটি জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের উপদেষ্টা পদে রাখার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করছেন অনেকেই।
সম্প্রতি সরকারি তিতুমীর কলেজস্থ পটুয়াখালী জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। সেই আহ্বায়ক কমিটির প্যাডে উপদেষ্টার পদে ইমাম হোসেনের নাম পাওয়া যায়, এবং নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমাম হাসান শুভ ফেসবুকে দাবি করেন এটি তিনি।
ছাত্রলীগ নেতা এবং একজন নারী হেনস্তাকারীকে এরকম পুনর্বাসন করার প্রচেষ্টায় ক্ষুব্ধ কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা৷ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাহরিমা তিশা নামে একজন লেখেন, ইমাম হাসান শুভ তিতুমীর কলেজের দর্শন বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের ছাত্র। সে ক্যাম্পাসে থাকাকালীন সময়ে বনানী থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপরে হামলা করেছে। এই আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগের দোসরা এখনও আমাদের ক্যাম্পাসে থাকে কিভাবে?
জানা যায়, ২০২২ সালে সরকারি তিতুমীর কলেজে পরীক্ষা দিতে এসে হেনস্তার শিকার হয় বাঙলা কলেজের নারী শিক্ষার্থী৷ পরে সেই শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে টাকা আদায়েরও অভিযোগ ওঠে ৷ ঐ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের উপ-মানব সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও বনানী থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমাম হাসান শুভ৷
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের আহবায়ক মোঃ ইউসুফ আলী খাঁন জানান, আমাদের কমিটি সাজানোর সময় সামান্য ভুল হয়েছে, এখানে নামটি ইমাম হোসেন নয় রুবেল হোসেন৷ এটি মূলত 'টাইপিং মিসটেক'৷ তবে ছাত্রলীগ অবশ্যই কোন ঠাঁই পাবে না৷
অন্যদিকে সংগঠনের সদস্য সচিব মোঃ আল আমিন খাঁন জানান ভিন্ন কথা৷ তিনি বলেন, ছাত্রলীগের ইমাম এবং উপদেষ্টা ইমাম হোসেন এক ব্যক্তি নন৷ উপদেষ্টা পদে ইমাম হোসেন তিতুমীর কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী৷
সদস্য সচিব অভিযোগ অস্বীকার করলেও উপদেষ্টা পদে অন্য ইমাম হোসেনের তথ্য তিনি দিতে পারেননি।
অন্যদিকে নারী হেনস্থায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ইমাম হাসান শুভ জানান, আমি সেই ইমাম নই৷ আমার নাম ইমাম হোসেন শুভ৷ আমি কমিটি দেখে ভুলে ভেবেছিলাম এটা আমি৷ আমি বছর দুয়েক আগ থেকে বাবার ব্যবসা সামলাচ্ছি, ক্যাম্পাসে আমার কোন সংযোগ নেই৷
পটুয়াখালী জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের শিক্ষক উপদেষ্টা ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ. কে. এম বজলুর রহমান জানান, বিষয়টি আমি জানতাম না৷ বিতর্কিত কেউ থাকলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷
আরেক শিক্ষক উপদেষ্টা ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মু: আবু জাফর বলেন, এ বিষয়ে আমি এখনো কিছু জানি না৷ তাদের সাথে এখন পর্যন্ত আমার কোন মিটিং হয়নি৷ আমি কলেজে এসে তাদের সাথে মিটিং করব।