মাঠপর্যায়ে রাখা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) যেন গলার কাঁটা হয়ে আটকে আছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। কারণ প্রত্যেক মাসিক সমন্বয় সভায় বারবার বলার পরও কোনোভাবেই ইভিএম সংরক্ষণের সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। তার মানে ইভিএম সংরক্ষণে নির্দিষ্ট বরাদ্দ না থাকায় কোনোভাবে ওয়ারহাউজ পাচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। তাহলে সংরক্ষণের অভাবে কি নষ্ট হয়ে যাবে মাঠপর্যায়ের ইভিএম? তবে ইতোমধ্যেই মাঠপর্যায়ের বেশিরভাগ ইভিএম অকেজো হয়ে পড়ছে বলেই জানা গেছে।
গত ২৫ আগস্ট ইসির মাসিক সমন্বয় সভায় এ তথ্য জানান মাঠপর্যায়ের ইসি কর্মকর্তারা। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসি সচিব শফিউল আজিম। সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
সভায় কুমিল্লা অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দুলাল তালুকদার জানান, বন্যার কারণে ফেনী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর অনেক অফিসের নিচতলা এখনো পানির নিচে তলিয়ে আছে, যার কারণে অফিস ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া, বন্যাদুর্গত এলাকার অনেক কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।
এ সময় ইভিএম প্রসঙ্গে উপস্থিত অন্যান্য আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইভিএম সংরক্ষিত আছে এবং কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের নীচ তলায় স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থায় আছে। এতে ইভিএমসমূহ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইভিএম সংরক্ষিত থাকায় সে সব প্রতিষ্ঠানে পাঠদানে অসুবিধা হচ্ছে। ইভিএমসমূহ যাচাই করে দেখা যায়, সংরক্ষিত ইভিএমগুলোর মধ্যে অনেক ইভিএম ব্যবহার অনুপযোগী অবস্থায় আছে। তাই ১০টি অঞ্চলে ইভিএম সংরক্ষণের জন্য ওয়ারহাউজ তৈরি করা প্রয়োজন। এজন্য ওয়ারহাউজ এর একটি খসড়া ডিজাইন প্রকল্প কার্যালয় হতে মাঠ পর্যায়ে দেওয়া প্রয়োজন। ওয়ারহাউজ তৈরির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় জমি এবং অন্যান্য খরচের প্রয়োজন হবে। ইভিএম প্রকল্প এবং মাঠ কার্যালয়ের সমন্বয়ে একটি ব্যয় প্রাক্কলন প্রস্তুত করে কমিশন সচিবালয়ের অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা প্রয়োজন।
সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনে এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অফিসগুলোর মেরামত করে ব্যবহার উপযোগী করার ব্যবস্থা যেতে পারে। আন্দোলনে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের মাঠ কার্যালয়ের ৫টি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ কার্যালয়গুলো ব্যবহারের জন্য জরুরিভিত্তিতে ভাড়াকৃত গাড়ির ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি গ্রহণসহ এ সংক্রান্ত কার্যক্রম বাজেট এবং সাধারণ সেবা অধিশাখা হতে গ্রহণ করা প্রয়োজন।
এছাড়া ঢাকা, চট্টগ্রাম ও টাঙ্গাইল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার জন্য অগ্রাধিকারভিত্তিতে প্রতিস্থাপক জিপ গাড়ি ক্রয় করা যেতে পারে এবং পর্যায়ক্রমে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসারের পুরানো গাড়ি কনডেম ঘোষণা দিয়ে নতুন জিপ গাড়ি প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে বলে জানান কর্মকর্তারা।