ঢাকা রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

রাষ্ট্র মেরামতে সরকারের কত সময় লাগবে জনগণের জানার অধিকার আছে


নিউজ ডেস্ক
১৭:২৫ - রবিবার, ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪
রাষ্ট্র মেরামতে সরকারের কত সময় লাগবে জনগণের জানার অধিকার আছে

রাষ্ট্র মেরামতের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের আরও কত মাস বা কত সময় প্রয়োজন সেটি জনগণের জানার অধিকার রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপি আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

তারেক বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কী করতে চাইছে, রাষ্ট্র মেরামতের জন্য সরকারের আর কত মাস বা কত সময় প্রয়োজন, সেটি জানার অধিকার জনগণের রয়েছে। সরকার জনগণের সামনে তাদের আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণা করলে একদিকে তাদের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে, অপরদিকে প্রশাসনিক কার্যক্রমেও গতিশীলতা বাড়বে।

তিনি বলেন, আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণার কথা শুনলেই যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চেহারায় অস্বস্তির ছাপ ফুটে ওঠে, সেটি হবে অবশ্যই গণআকাঙ্ক্ষা বিরোধী। সরকার তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে যত বেশি জনগণের কাছে স্বচ্ছ থাকবে, জনগণও সরকারের প্রতি সমর্থনের হাত তত প্রসারিত রাখবে।

প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো হাসপাতালে ডেঙ্গুতে মানুষের মৃত্যু অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসা খরচ যোগাতে অনেকের জীবনে নাভিশ্বাস উঠছে। পাশাপাশি নিত্যপণ্যের মূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা প্রায় প্রতিটি মানুষ। প্রতিদিনের সংসারের ব্যয় মেটাতে জনগণকে যুদ্ধ করতে হচ্ছে।

তারেক রহমান বলেন, জনজীবনে নিত্য দুর্ভোগ কিংবা বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করে অন্তর্বর্তী সরকার যদি শুধু সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করে তাহলে জনগণের কাছে ‘সংস্কার আগে নাকি সংসার আগে’– এ প্রশ্নটি মুখ্য হয়ে উঠতে পারে।

দুর্ভোগ মেনে নিলেও জনগণ এখনো সরকারের বিরুদ্ধে উচ্চবাচ্য করছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ বর্তমান সরকারকে সফল দেখতে চায়। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিজেরা নিজেদের সফল দেখতে চায় কি না তা তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে।

একটি দেশের জন্য ৫৪ বছর কম সময় নয় মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, রক্তের বিনিময়ে দেশের জনগণ আজ এক অভূতপূর্ব ঐক্যের মোহনায় এসে দাঁড়িয়েছে। এ ঐক্যকে কাজে লাগিয়ে একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এ লক্ষ্যে বিএনপি ইতোমধ্যে ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই– সব অস্পষ্টতা কাটিয়ে অচিরেই নির্বাচনের রোডম্যাপে যাত্রা শুরু করবে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। সেই যাত্রায় আপনাদের বিশ্বস্ত সঙ্গী হচ্ছে দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ। সুতরাং জনগণের সঙ্গে থাকুন এবং জনগণকে সঙ্গে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।

বিএনপির শীর্ষ এ নেতা বলেন, আমাদের মনে রাখা দরকার জনগণ শক্তিশালী না থাকলে জাতীয় ঐক্য শক্তিশালী হয় না। রাষ্ট্র এবং রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের জন্য সংস্কারের বিকল্প নেই। তবে একইসঙ্গে এটাও মনে রাখা জরুরি কেউ স্বৈরাচার কিংবা ফ্যাসিস্ট হতে চাইলে সংবিধান বা প্রবিধান বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, রাষ্ট্র এবং সরকারকে ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার থেকে সুরক্ষিত রাখতে চাইলে সুসংবদ্ধ বিধিবিধানের চেয়ে রাষ্ট্র ও রাজনীতির প্রতিদিনের কার্যক্রমে, নাগরিক জীবনের প্রতিদিনের চাল-চিত্রে গণতান্ত্রিক রাজনীতি সংস্কৃতির চর্চা অত্যন্ত জরুরি। এ চর্চার মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজ থেকে ফ্যাসিবাদের উপাদান দূর করা সম্ভব।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন প্রমুখ।