মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়িতে বাবু হাওলাদার নামের এক ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যকে প্রায় দেড় ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রেখে ব্যাংকের ডেস্কের ভেতরে মোবাইলে গেম খেলায় ব্যস্ত ছিলেন এক ব্যাংক কর্মকর্তা। সোনালী ব্যাংকের টঙ্গীবাড়ী শাখার ওই কর্মকর্তার নাম আসাদুজ্জামান বিদ্যুৎ। তার বিরুদ্ধে এর আগেও এমন অভিযোগ থাকলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। প্রায় দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা গ্রাহক বাবু হাওলাদার হাসাইল বানারী ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য এবং স্থানীয় সাংবাদিক।
ভুক্তভোগী বাবু হাওলাদার বলেন, গতকাল মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদের একটি প্রকল্পের বিল উত্তোলন করতে পিআইও অফিস থেকে দেওয়া একটি রশিদ নিয়ে আমি ও কাইয়ূম মেম্বার সোনালি ব্যাংকের কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বিদ্যুৎ এর কাছে জমা দেই। সরকারি বিধি অনুযায়ী ওই রশিদের বিনিময়ে ব্যাংক কর্মকর্তার আমার কছে রশিদের সমপরিমাণ টাকার একটি চেক দেওয়ার কথা। কিন্তু প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় অতিবাহিত হলেও তিনি বিধি অনুযায়ী আমার রশিদের বিনিময়ে চেক না দিয়ে মোবাইলে গেম খেলছিলেন। পরে উনাকে ভালোভাবে বললাম ভাই আমিতো রশিদ জমা দিয়েছি রশিদের বিনিময়ে আমার চেকটা দেন।
উনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন আপনার বিলের রশিদতো আমার কাছে জমা নেই। পরে আমি বললাম আপনার কাছেই তো জমা দিয়েছি ভালো করে দেখেন। পরে রশিদ খোঁজাখুঁজি করে তার সামনে থাকা একটি ঝুড়িতে আমার দেওয়া রশিদটি তিনি দেখতে পান। পরে আমি উনাকে বললাম আপনার বেখেয়ালিপনার কারণে আমাকে দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হলো। এ সময় ওই কর্মকর্তা আমার সঙ্গে রাগারাগি করে বলেন তুই আরও এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাক। পরে বিষয়টি ব্যাংকের ম্যানেজারকে বললে তিনি এসে আমাকে রশিদের বিনিময়ে সম-পরিমাণ টাকার চেক দেন। পরে আমি ওই চেক জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করি।
অপর ইউপি সদস্য কাইয়ূম সেখ বলেন, যখন বাবু হাওলাদারের জমা দেওয়া রশিদের টাকা ব্যাংক কর্মকর্তা দিচ্ছিল না তার সঙ্গে তর্ক হচ্ছিল তখন আমি ওই কর্মকর্তাকে বলি ভাই থাক যা হওয়ার হয়েছে উনার রশিদটা উনাকে ফিরিয়ে দেন। তখন ওই ব্যাংক কর্মকর্তা বলে না ওকে রশিদ নিতে হলে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বিদ্যুৎ বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা পোস্টকে বলেন, কালকে ওই ইউপি সদস্য যখন আমাদের ব্যাংকে আসে ওই সময় আমি লাঞ্চে ছিলাম। ওই ইউপি সদস্যসহ অন্যান্য কয়েকজন ইউপি সদস্য আমি লাঞ্চে থাকা অবস্থায় টাকা উত্তোলনের জন্য বেশ কিছু রশিদ আমার টেবিলের ওপরে রাখেন। পরে ওই ইউপি সদস্যর রশিদটি টেবিল থেকে অসাবধনতা বসত নিচে পড়ে যায়। এ সময় অন্যান্য ইউপি সদস্যদের বিল দিতে গিয়ে অনেকটা সময় পার হয়ে যাওয়ার পর ওই ইউপি সদস্য তার রশিদের বিষয়ে জানতে চাইলে আমি তার রশিদটি খোঁজতে গিয়ে দেখি ওটা নিচে পড়ে রয়েছে। মোবাইলে গেম খেলার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার বাসা থেকে ভিডিও ফোন দিয়েছিল আমি কিছুটা সময় ভিডিও ফোনে কথা বলেছি আমি কোনো মোবাইল গেম খেলিনি।
এ বিষয়ে জানতে সোনালী ব্যাংক টঙ্গীবাড়ী শাখার ম্যানেজার মো. মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরে আমি ওই কর্মকর্তাকে ডেকে সর্তক করেছি। ওই কর্মকর্তা এ ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
