ঢাকা বুধবার, মে ২১, ২০২৫

Popular bangla online news portal

Rupalibank

গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি সেনাদের অনুপ্রবেশ ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’


নিউজ ডেস্ক
৩:৪২ - বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ১৬, ২০২৩
গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি সেনাদের অনুপ্রবেশ ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের সবচেয়ে বড় চিকিৎসা কেন্দ্র আল-শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অনুপ্রবেশকে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ বলেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস।

একইসঙ্গে হাসপাতাল কখনোই যুদ্ধক্ষেত্র নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি। আল-শিফা হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে ইসরায়েলি সৈন্যদের অভিযান চালানোর প্রতিক্রিয়ায় বুধবার (১৫ নভেম্বর) তিনি একথা বলেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বুধবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান বলেন, গাজার আল-শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলের সামরিক অনুপ্রবেশ ‘সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য’। তিনি বলেন, ‘হাসপাতাল যুদ্ধক্ষেত্র নয়। আমরা হাসপাতালের স্টাফ এবং রোগীদের নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।’

গেব্রেইয়েসুস বলেন, ‘তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সবচেয়ে জরুরি।’

আল-শিফা হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে ডব্লিউএইচও যোগাযোগ হারিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাসপাতালের মতো স্বাস্থ্য অবকাঠামো, স্বাস্থ্যকর্মী, অ্যাম্বুলেন্স এবং রোগীদের অবশ্যই কেবল ‘সকল যুদ্ধের’ সময়ই নয়, সামরিক পরিকল্পনা থেকেও তাদের নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখতে হবে।

ডব্লিউএইচও প্রধান বলেন, ‘এমনকি যদি স্বাস্থ্য অবকাঠামোগুলো সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতেই হয় তবে সেখানে সতর্কতার নীতিগুলো সবসময় মেনে চলতে হবে। রোগী এবং কর্মীদের নিরাপত্তা, সেইসাথে বৃহত্তর সম্প্রদায়ের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার সুরক্ষা হচ্ছে সর্বোচ্চ গুরুত্বের বিষয়। আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, গত তিন দিনে গাজায় মৃত্যু বা আহতের সংখ্যা সম্পর্কে কোনও আপডেট পায়নি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আর এটিই গাজার বর্তমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা তাদের জন্য ‘কঠিন করে তুলেছে’।

গাজার সমস্ত হাসপাতাল বর্তমানে জ্বালানি সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে জানিয়ে টেড্রোস বলেন, হাসপাতালের জেনারেটর, অ্যাম্বুলেন্স, ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্ট, স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এবং টেলিযোগাযোগ চালু রাখার জন্য ‘প্রতিদিন কমপক্ষে ১ লাখ ২০ হাজার লিটার জ্বালানি প্রয়োজন’।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজায় সাহায্য প্রবেশে হয়তো সক্ষম হচ্ছি, কিন্তু জ্বালানি ছাড়া আমরা এসব সহায়তা যেখানে নিয়ে যেতে হবে সেখানে পৌঁছাতে পারি না।’

মূলত, গাজার বৃহত্তম চিকিৎসাকেন্দ্র আল-শিফা হাসপাতালটি কয়েকদিন ধরে ঘেরাও করে রাখার পর বুধবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই মেডিকেল কমপ্লেক্সে অভিযান চালায়।

পরে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বুধবার জানায়, ‘ইসরায়েলি সৈন্যরা আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সের ভেতরে অনেক রোগী, আহত ব্যক্তি এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের পাশাপাশি বেশ কিছু চিকিৎসা ও নার্সিং কর্মীদের ওপরও আক্রমণ করেছে, তাদের পোশাক খুলতে বাধ্য করেছে এবং অপমান করেছে।’

ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তারা আল-শিফা হাসপাতালের নির্দিষ্ট এলাকায় হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে।

হাসপাতালটিতে হামাসের ঘাঁটি রয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। এছাড়া ইসরায়েলের এই দাবিকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্রও জানিয়েছে, তাদের কাছেও আল শিফা হাসপাতালের নিচে সুড়ঙ্গে হামাসের একটি ‘কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল সেন্টার’ থাকার তথ্য রয়েছে।

তবে এ দাবি অস্বীকার করেছে হামাস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে আল শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলি অভিযানের নিন্দা জানিয়ে একে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ বলে অভিহিত করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।

অবশ্য হাসপাতালে হামলার বিরুদ্ধে ডব্লিউএইচও প্রধান বরাবরই সোচ্চার। এমনকি হাসপাতালে হামলায় বিশ্ব চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।