ঢাকা শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

ক্লাসে থাকে না শিক্ষার্থী, নেওয়া হয় না হাজিরা


নিউজ ডেস্ক
৬:৩৩ - সোমবার, এপ্রিল ৩, ২০২৩
ক্লাসে থাকে না শিক্ষার্থী, নেওয়া হয় না হাজিরা

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া পৌরসভার মকিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সর্বমোট ৬০ জনের মতো শিক্ষার্থী থাকার দাবি করা হলেও সরেজমিনে পাওয়া গেছে মাত্র ৯ জন। এর বিপরীতে স্কুলে আছেন ৬ জন শিক্ষক। যদিও উপস্থিত পাওয়া গেছে ৪ জন শিক্ষককে।

এভাবেই দায়িত্বে অবহেলা ও স্বেচ্ছাচারিতায় চলছে বিদ্যালয়টি। শিক্ষকদের স্বেচ্ছাচারিতায় শিক্ষার্থী সংকটে ভুগছে প্রতিষ্ঠানটি। কোনো কোনো শ্রেণিতে শিক্ষার্থী থাকার পরও হয় না হাজিরা। তবে এসব ঘটনায় শ্রেণি শিক্ষককে দুষছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়টিতে শিশু শ্রেণিতে কাগজে কলমে ১৭ জন শিক্ষার্থী থাকলেও ১৩ মার্চ ক্লাসে এসেছে ১৪ জন, প্রথম শ্রেণিতেও খাতায় ১৭ জন থাকলেও সেদিন হাজিরাই না হওয়ায় কয়জন শিক্ষার্থী এসেছিল তা জানা যায়নি। ২য় শ্রেণিতে খাতায় ১০ জন থাকলেও দীর্ঘ ৮ দিন হলো হাজিরা খাতায় উপস্থিতি না নেওয়ায় কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

তবে, দুপুরের দিকে ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির ক্লাস চলাকালীন দেখা গেছে, ৩য় শ্রেণির হাজিরা না হলেও উপস্থিত ছিল ৪ জন, ৪র্থ শ্রেণিতে ৮ জনের মধ্যে উপস্থিত ছিল ৫ জন ও ৫ম শ্রেণিতে একজনও উপস্থিত ছিল না। সরেজমিনে বিদ্যালয়টিতে সর্বমোট উপস্থিত পাওয়া গেছে ৯ জন শিক্ষার্থী। বিপরীতে ৬ জন শিক্ষকের মধ্যে পাওয়া গেছে মাত্র ৪ জন শিক্ষককে। 

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সরেজমিনে মকিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন শিক্ষক অফিস কক্ষে বসে গল্প করছেন। ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কক্ষে অল্প কয়েকজন শিক্ষার্থী থাকলেও ৫ম শ্রেণির কক্ষটি ফাঁকাই পড়ে ছিল। নেই একজন শিক্ষার্থীও। এমনকি, ২য় শ্রেণির হাজিরা খাতায় শিক্ষার্থীদের হাজিরা হয়নি দীর্ঘ ৮ দিন। অনেকটা একই অবস্থা ৩য় শ্রেণির ক্ষেত্রেও।

শিক্ষার্থীদের হাজিরা খাতার দায়িত্বে থাকা শ্রেণি শিক্ষক মোছা. মনিরা খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত সপ্তাহে আমার ছেলে একদিন অসুস্থ ছিল তাই হাজিরা খাতায় উপস্থিতি নেওয়া হয়নি। তবে সেটা একদিনের হতে পারে, এতো দীর্ঘসময় কেন হাজিরা খাতায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেওয়া হয়নি এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মো. ছাইদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পঞ্চম শ্রেণিতে মাত্র ৫ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে একজন অসুস্থ ও দুইজন বিয়ের দাওয়াতে গেছে। বাকিরা কেন আসেনি সেটা বলতে পারছি না।

শিক্ষার্থীদের হাজিরার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, আমি সব শ্রেণি শিক্ষককে বলেছি নিয়মিত শিক্ষার্থীদের হাজিরা খাতায় উপস্থিতি নিতে। কিন্তু তারা কেন নিচ্ছেন না বিষয়টি আমি জানি না। আমি সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য মকিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুলতান মাহমুদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

রায়গঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আপেল মাহমুদ বলেন, ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এমনিতেই কম। তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। আর শিক্ষার্থী এতো কম এবং হাজিরা না নেওয়ার বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম মন্ডল বলেন, শিক্ষার্থী কম থাকাটা আলাদা বিষয়। কিন্তু তারা শিক্ষার্থীদের হাজিরা না নিয়ে বড় অপরাধ করেছেন। আমি এখনই বিষয়টি দেখার জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিচ্ছি।