ঢাকা শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

পুলিশের ওপর হামলা, মদ ও অস্ত্রসহ আ.লীগ নেতার স্ত্রী আটক


নিউজ ডেস্ক
৭:১৭ - রবিবার, এপ্রিল ২১, ২০২৪
পুলিশের ওপর হামলা, মদ ও অস্ত্রসহ আ.লীগ নেতার স্ত্রী আটক

সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার রেলওয়ে কলোনিতে বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে গিয়ে পুলিশের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা ও তার স্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন। এতে ৩ পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে ওই নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র ও ২০ লিটার দেশীয় মদসহ তার স্ত্রীকে আটক করে পুলিশ।

আটককৃত লাকী পারভীন (৩৭) রেলওয়ে কলোনির ১৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রানার স্ত্রী। সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম শনিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাতে সদর উপজেলার রেলওয়ে কলোনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত করে একটি ও অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে জরিনা বেগম নামে একজন অভিযোগ করেন, নাবালিকা মেয়ে নদী খাতুনকে (১৪) তার স্বামী সাইদুল ইসলাম জোর করে বাল্যবিবাহ দিচ্ছেন। এজন্য তার আইনি সহায়তা প্রয়োজন। পরে জরিনা বেগম থানায় গেলে সিরাজগঞ্জ সদর থানার এসআই ব্রজেশ্বর বর্মন সঙ্গীয় অফিসার ও নারী ফোর্স নিয়ে রেলওয়ে কলোনীর সেই বাড়িতে গিয়ে বাল্যবিবাহের সত্যতা পান।

পুলিশ বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেয় ও সংশ্লিট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলে। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম রানার নেতৃত্বে আসামি সাইদুল ইসলাম (৪০), টুনি বেগম (৪১), আমেনা বেগম (৩৫), ইব্রাহিম (২৭), রেজা (৩০), বাবু ওরফে বড়বাবু (৩০), আশিক (২৫), নুর ইসলাম (৪৬), আসলাম (৩৫), হাসানসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জন পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এসআই ব্রজেশ্বর বর্মণসহ তার সঙ্গে থাকা অফিসার ও নারী পুলিশকে ঘিরে ধরে। এ সময় তারা পুলিশের মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করে। সংবাদদাতা জরিনাসহ তার সঙ্গে থাকা ছেলে জীবন ও মেয়ে নদী খাতুনকেও মারধর করে।

এক পর্যায়ে আসামিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়লে এসআই ব্রজেশ্বর বর্মণসহ তার সঙ্গীরা আহত হন। পরে সঙ্গে থাকা বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে থানায় সংবাদ দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আসামিরা পালিয়ে যায়।

পরবর্তী সময়ে আসামি রানার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশকিছু দেশীয় অস্ত্র ও ২০ লিটার চোলাই মদসহ তার স্ত্রীকে আটক করা হয়। দেশীয় অস্ত্রের মধ্যে ৩টি তলোয়ার, ২টি বড় ছোরা ও একটি বল্লম রয়েছে। এ সময় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা পলাতক ছিলেন।

সদর থানা পুলিশের উপ-পরির্দশক (এসআই) ব্রজেশ্বর বর্মণ ঢাকা পোস্টকে বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। এ সময় সরকারি কাজে বাধা দেওয়া হয়। তাদের হামলায় পুলিশের মোটরসাইকেল ভাঙচুরসহ এএসআই মঈদুল ইসলাম ও নারী কনেস্টেবল ফেরদৌসী রহমান আহত হন। পরে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য ১৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রানার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাল্যবিবাহ বন্ধের সময় পুলিশের ওপরে হামলার নেতৃত্বকারী আমিনুল ইসলাম রানার স্ত্রীকে আটক করা হয়। পরে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।