ঢাকা মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

ঈদ কেনাকাটায় মানুষের ঢল, বিক্রি হচ্ছে বৈশাখী পোশাক-গহনাও


নিউজ ডেস্ক
১৭:৩১ - সোমবার, এপ্রিল ৮, ২০২৪
ঈদ কেনাকাটায় মানুষের ঢল, বিক্রি হচ্ছে বৈশাখী পোশাক-গহনাও

দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় এই উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজধানীর ছোট-বড় মার্কেট-শপিংমল এখন লোকে লোকারণ্য। পরিবার-পরিজন ও প্রিয়জনের জন্য নতুন কাপড় কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সবাই।

সকাল থেকে মধ্যরাত, কিছু এলাকায় ভোররাত পর্যন্ত খোলা রাখা হচ্ছে দোকান। জমজমাট বেচাকেনা চলছে ফুটপাতেও। সবমিলিয়ে ঈদের আগের এই সময়ে কেনাকাটা করতে সব বিপনি বিতানে ঢল নেমেছে মানুষের।

এছাড়া ঈদের ঠিক পরেই পহেলা বৈশাখ, সে উপলক্ষ্যেও রয়েছে ক্রেতা সমাগম। বৈশাখ মাসের প্রথম দিনকে বরণ করে নিতে ছোট-ছোট গহনা, সাদা-লাল শাড়ি ও থ্রিপিসের বিকিকিনি চলছে মার্কেটগুলোতে।

সোমবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর নিউমার্কেট, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, এলিফ্যান্ট রোড ঘুরে দেখা যায়, পুরো এলাকায় হাজার-হাজার মানুষের উপস্থিতি। বিভিন্ন মার্কেটে ঘুরে পছন্দের জামা-কাপড়, পাঞ্জাবি-পায়জামা, শার্ট-প্যান্ট, জুতা, শাড়ি, থ্রিপিস, বাচ্চাদের কাপড় কিনছেন তারা। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিড় নিউমার্কেটের মূল অংশের ভেতরে। এর বাইরে গাউছিয়া মার্কেট, নূর ম্যানশন মার্কেট, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, নুরজাহান সুপার মার্কেট, গ্লোব শপিং সেন্টারের ভেতরেও জমজমাট বেচাকেনা চলছে। ক্রেতারা বলছেন, রোজার ঈদে নতুন জামা কাপড় কেনার প্রচলন বহু আগে থেকেই চলে আসছে। সেজন্য পরিবার পরিজন এবং অন্যান্য সদস্যদের জন্য নতুন জামা কাপড় কিনতে ভিড় করছেন তারা।

মিরপুর থেকে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা আব্দুস সালাম নামের এক ক্রেতা বলেন, অফিস খোলা থাকার কারণে এতদিন কেনাকাটা করতে পারিনি। এখন স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে নিউমার্কেট এসেছি। পাঞ্জাবি আর শাড়ি কিনব। এখনো কেনাকাটা করা হয়নি। বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখছি।

মারিয়া সুলতানা নামে এক ক্রেতা বলেন, পরিবার-পরিজন এবং কাছের আত্মীয়-স্বজনের জন্য নতুন কাপড় কেনা অনেক আগেই শেষ হয়েছে। তবে আজকে ঘরের কাজে যারা সহায়তা করেন তাদের জন্য জামা কাপড় কিনতে এসেছি। এই এলাকায় প্রচুর ভিড়। মার্কেটেও মানুষের অনেক উপস্থিতি দেখেছি। তবে মনে হচ্ছে, শেষ সময়েও বিক্রেতারা কাপড়ের দাম বেশি চাইছেন।

এমন অবস্থায় বিক্রি নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট ব্যবসায়ীরা। তারা প্রত্যাশা করছেন, আগামী দুইদিন আরো বেশি ক্রেতার উপস্থিতি হবে।

নুরুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, এবার রোজার শুরু থেকেই মানুষের উপস্থিতি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট ছিলাম। আর শেষ সময়েও ক্রেতার ঢল নেমেছে। গত কয়েকদিন ধরেই প্রায় ভোররাত পর্যন্ত মার্কেট খোলা রাখছি। সববয়সী ও সবশ্রেণির মানুষের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন বিভিন্ন ধরনের পোশাক রাখা হয়েছে। চাঁদ রাত পর্যন্ত টানা দোকান খোলা রাখা হবে। আশা করি আগামীকাল এবং রোজা যদি ৩০টি হয় তাহলে পরেরদিনও মানুষের উপস্থিতি এমন থাকবে। এরপর আবার পহেলা বৈশাখ আছে। গতকয়েক বছর ধরে তো পহেলা বৈশাখ রোজার মধ্যে পালন করা হতো। কিন্তু এবারের পহেলা বৈশাখের সময় ঈদের পরে। সেজন্য কিছুটা বেশি বেচাবিক্রি হচ্ছে।

তবে ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের শাড়ির দোকানগুলোতে কিছুটা কম ভিড় দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শহর কেন্দ্রিক নারীদের শাড়ি পরার প্রবণতা কমে যাওয়ায় ঈদে শাড়ির বিক্রি কমেছে। একইসাথে এবারের ঈদে গরম বেশি পড়বে- এমন ধারণার কারণেও অনেকে শাড়ির প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এরপরও শাড়ির কালেকশনের কমতি নেই। কাতান, সিল্ক, কাঞ্জিভরম, সুতি, টাঙ্গাইলের তাঁতসহ নানান রং-বেরঙয়ের শাড়ির সমাহার দেখা গেছে দোকানগুলোতে।

নিউমার্কেট ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহিন বলেন, শেষ সময়ে ঢাকাবাসী যারা রয়েছেন তারাই মার্কেটে আসেন। যাদের বাড়ি দূরে বা জেলা শহরে তারা এরই মধ্যে বাড়ি চলে গিয়েছেন এবং অনেকেই আজকাল যাবেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে জুতা, থ্রি পিস, ট্রাভেল ব্যাগ। আর সবেচেয়ে কম বিক্রি হয়েছে শাড়ি। তবে এ বছর বিক্রি নিয়ে কেউ হতাশ নয়। কমবেশি সবারই ব্যবসা হয়েছে। আবার ঈদের পরেই পহেলা বৈশাখ। সেজন্য ছোটখাটো কিছু গহনাপত্রও মানুষজন কেনাকাটা করেছে। এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি দামি পণ্য হচ্ছে জুয়েলারি। তারপরও আমরা বলব খারাপ বিক্রি হয়নি।

তিনি আরো বলেন, আমরা প্রত্যাশা করি এখনো যে সময়টুকু রয়েছে আরো ভালো বিক্রি হবে। এই পুরো এলাকাজুড়ে সব ধরনের ক্রেতাদের উপযোগী পোশাক পাওয়া যায়। পাঞ্জাবি, জুতা, শার্ট-প্যান্ট, মেয়েদের পোশাকসহ ক্রোকারিজ, ইলেকট্রনিক পণ্যসহ অসংখ্য জিনিসপত্রের সমারোহ। সেজন্য মানুষজন আস্থা নিয়ে কেনাকাটা করতে আসেন।

ক্রেতা সাধারণের যেন কোনো সমস্যা না হয় সেদিকে যথাসম্ভব খেয়াল রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।