ভারতের উত্তরাখণ্ডে টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারে চলমান অভিযান চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। গত ১২ নভেম্বর ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ টানেলের একটি অংশ ধসে পড়ে। এরপর এটির ভেতর আটকা পড়েন ৪১ শ্রমিক।
ভারতের জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট জেনারেল সৈয়দ আতা হাসনাইন বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শ্রমিকদের আগামী কয়েক ঘণ্টা বা শুক্রবার সকালের মধ্যে উদ্ধার করা হবে। যদিও এর আগে উদ্ধারকারীরা জানিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবারের মধ্যে এই উদ্ধার অভিযান শেষ হবে।
এনডিএমের এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শ্রমিক এবং উদ্ধারকারী উভয়েই ঝুঁকিতে আছেন। ফলে তারা কোনো তাড়াহুড়া করবেন না। তিনি বলেছেন, যদি ‘দুই ঘণ্টার’ মধ্যে অভিযান শেষ করার চেষ্টা করা হয় তাহলে এটি উদ্ধারকারীদের ওপর বাড়তি চাপ ফেলবে।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুসকার সিং ধামি মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে (সাবেক টুইটার) বৃহস্পতিবার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী পুসকার সিং শ্রমিকদের বলেন, তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্ধার করা হবে এবং তাদের কাছে পৌঁছাতে উদ্ধারকারীদের আর শুধুমাত্র ১০ মিটার ড্রিল করতে হবে।
স্থগিত থাকার পর গতকাল বুধবার রাত থেকে ওই টানেলে আবারও উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। উদ্ধারকারীরা এখন পর্যন্ত ৪৫ মিটার ধ্বংসস্তূপে আড়াআড়িভাবে মোটা পাইপ স্থাপন করতে সমর্থ হয়েছেন। আর ১০ মিটার পর্যন্ত পাইপ প্রবেশ করানো গেলে সেটির ভেতর দিয়ে শ্রমিকরা বের হয়ে আসতে পারবেন।
বুধবার রাতে অবশ্য ড্রিল চলাকালীন উদ্ধার অভিযান একবার বাধাগ্রস্ত হয়। ওই সময় একটি লোহার বারে গিয়ে ড্রিলটি ঠেকে যায়।
আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারে উদ্ধারকারীদের সবমিলিয়ে ৫৭ মিটার ড্রিল করতে হবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, শ্রমিকদের চাকাচালিত স্ট্রেচারে করে বের করে আনা হবে। যদিও প্রথমে বলা হয়েছিল পাইপ স্থাপনের পর শ্রমিকরা হামাগুড়ি দিয়ে বের হয়ে আসবেন। কিন্তু প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে এক জায়গায় আটকে থাকা শ্রমিকরা সেটি করতে পারবেন কি না এ নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকা এসব শ্রমিকের বেশিরভাগই শারীরিভাবে এখন আর অতটা শক্তিশালী নেই।
উদ্ধার করার সঙ্গে সঙ্গে যেন শ্রমিকদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া যায়; সেজন্য হাসপাতালে ৪১টি বেডও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, এনডিটিভি