নিজেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার হিসেবে পরিচয় দিতেন তিনি। সেই পরিচয়ে বরিশালের কণিকা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখতেন নিয়মিত। কিন্তু প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধে গরমিল দেখে সন্দেহ হয় আরেক চিকিৎসকের। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার পরিচয় দেওয়া সেই যুবককে চ্যালেঞ্জ করলেই বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল।
আসলে তিনি চিকিৎসকই নন। প্রতারণা করে চিকিৎসকের পরিচয়পত্র তৈরি করে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখতেন। তাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন আরেক চিকিৎসক। আটক ব্যক্তির নাম ইমরান হোসাইন রানা (৩৩)। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তিনি নারায়ণগঞ্জের পাগলা পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালী মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) আরাফাত হাসান। তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটককে থানায় আনা হয়েছে। বিস্তারিত জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআই জানান, ল্যাবের এক্সরে টেকনেশিয়ান সোহরাব ও তার সহকারী আব্দুর রাজ্জাককেও আনা হয়েছে।
জানা গেছে, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে কণিকা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক ল্যাবে নিয়মিত রোগী দেখতেন ইমরান হোসাইন রানা। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা থেকে বরিশালে চিকিৎসা নিতে আসেন আবু হানিফ নামে একজন। দালালদের খপ্পরে ফেলে তাকে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেওয়া হয়। সেখানে আবু হানিফকে দেখে কথিত চিকিৎসক ইমরান হোসাইন রানা প্রেসক্রিপশন লিখে দেন এবং কয়েকটি শারীরিক পরীক্ষা করাতে দেন।
স্বজন সূত্রে আবু হানিফ প্রেসক্রিপশন দেখান বরিশালে অবস্থান করা ঝালকাঠি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রিফাত আহমেদকে। তিনি প্রেসক্রিপশনে ওষুধের গরমিল দেখে কয়েকজনকে নিয়ে কথিত চিকিৎসক ইমরান হোসাইন রানার চেম্বারে গিয়ে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
চিকিৎসক রিফাত আহমেদ বলেন, রানার প্রেসক্রিপশন দেখে আমার সন্দেহ হয়। তখন পরিচয় জানতে চাইলে তার দেখানো আইডি কার্ড ও রেজিস্ট্রেশন নম্বরটি সঠিক বলে মনে হয়নি। পরে অন্য চিকিৎসকদের সহায়তায় চিকিৎসক সেজে থাকা রানাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
তার প্রেসক্রিপশনে এমবিবিএস (বিসিএস স্বাস্থ্য), ইএফএইচ (ইন্ডিয়া), এফসিপিএস (মেডিসিন), সিসিডি (বারডেম) ঢাকা, মেডিকেল অফিসার (মেডিসিন বিভাগ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল উল্লেখ করেছেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, একজন ভুয়া চিকিৎসকসহ দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এখনো তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।