বেশি দামে ডলার বিক্রিসহ নানা অনিয়মের অপরাধে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দুই মানি চেঞ্জারের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মানি চেঞ্জার দুটি হল, এভিয়া মানি চেঞ্জার এবং ইম্পেরিয়াল মানি এক্সচেঞ্জ।
আগামী ৯ মার্চের আগে মানি চেঞ্জার দুটি বিমানবন্দর থেকে তাদের কার্যক্রম প্রত্যাহার না করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের লাইসেন্স বাতিল করবে বলে জানিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিদর্শন করে ঢাকার বিমানবন্দরের দুই মানি চেঞ্জারের অনিয়ম খুঁজে পায়। প্রতিষ্ঠান দুটি বেশি দামে গ্রাহকদের কাছে ডলার বিক্রি করেছে। তাদের ডলার ক্রয় ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের স্বচ্ছতা ছিল না। ডলার কেনার সময় গ্রাহকদের ভুয়া রসিদ দিচ্ছিল তারা।
দীর্ঘদিন ধরে দেশে চলছে ডলার সংকট। ব্যাংক ও মানি চেঞ্জারগুলোর অনিয়ম ডলার সংকটের অন্যতম কারণ বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। এমন পরিস্থিতিতে গত দুই বছরে ডলার নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে বেশ কিছু মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত ও অনেক ব্যাংককে জরিমানা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ২০২২ সালের মার্চ থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এতে সংকট আরও বেড়ে যায়। পরে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেওয়া হয় এবিবি ও বাফেদার ওপর। এর পর থেকে এই দুই সংগঠন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরোক্ষ নির্দেশনায় রপ্তানি ও প্রবাসী আয় এবং আমদানি দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে।
সবশেষ ব্যাংকগুলোর ঘোষণা অনুযায়ী, আমদানি দায় পরিশোধে ডলারের দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। আর প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কেনার ডলার দাম ১১০ টাকা।
আন্তঃব্যাংকে ডলার লেনদেন হয়েছে ১১০ টাকায়। ব্যাংকগুলো নগদ ডলার বিক্রি করছে ১১৫ থেকে ১১৬ টাকা। তবে কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুণতে হচ্ছে ১২৪ টাকা। চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণের জন্য যারা বিদেশে যাচ্ছেন তাদের নগদ প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ১২৪ টাকা পর্যন্ত।