এক কথায় অবিশ্বাস্য আর অকল্পনীয় এক স্পেল। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিজের দেশের মাটিতে ৩৯৭ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়েও যেন নিশ্চিন্ত হতে পারছিলেন না ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এরপর বল হাতে অবিশ্বাস্য কিছুই যেন করলেন শামি। দিনশেষে তার বোলিং ফিগার দাঁড়ালো ৯.৫ ওভারে ৫৭ রান খরচায় ৭ উইকেট। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সেমিফাইনাল যেন বদলে গেল ‘শামি-ফাইনালে।’
বিশ্বকাপে ভারতের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীর তালিকায় নিজেকে আগেই বসিয়েছিলেন শামি। জহির খান আর জাভাগাল শ্রীনাথের সঙ্গে ৪৪ উইকেট নিয়ে ভারতের সেরা বোলারের তালিকাটা ভাগাভাগি করছিলেন তিনি। তবে গতকালের ৭ উইকেট তাকে পার করিয়েছে বিশ্বকাপের ৫০ উইকেটের মাইলফলক।
তবে বিশ্বকাপে সাত উইকেট পাওয়ার ঘটনা এবারেই প্রথম না। বরং পঞ্চম বলার হিসেবে সাত উইকেটের এলিট ক্লাবে এসেছেন তিনি। এর আগে ২০০৩ সালেই দুবার সাত উইকেট নেওয়ার ঘটনা দেখা গিয়েছে। দুটোই অস্ট্রেলিয়ান বোলারের কীর্তি। নামিবিয়ার বিপক্ষে ১৫ রানে ৭ উইকেট শিকার করেছিলেন গ্লেন ম্যাকগ্রা। সে একই আসরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০ রান খরচায় ৭ উইকেট নিয়েছিলেন আরেক অজি পেসার অ্যান্ডি বিকেল।
তবে বিশ্বকাপে প্রথম সাত উইকেট পেয়েছিলেন উইন্সটন ডেভিস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ডানহাতি ফাস্ট বোলার ১৯৮৩ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই ৫১ রানে ৭ উইকেট শিকার করেন। এরপর লম্বা সময় ধরে সেটিই ছিল বিশ্বকাপের সেরা ফিগার। ২০০৩ সালে যা নিজের দখলে নেন ম্যাকগ্রা।
এরপরের ৭ উইকেট শিকারের ঘটনা ২০১৫ বিশ্বকাপে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৩ রানে ৭ উইকেট নিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদি। আর সবশেষ গতকাল বুধবার মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই ৭ উইকেট শিকার করেছেন ভারতের মোহাম্মদ শামি।
উল্লেখ্য, শামির আগে যারাই ৭ উইকেট প্রত্যেকেই এই কীর্তি গড়েছেন গ্রুপপর্বে। বিশ্বকাপের নকআউট পর্বের বিচারে শামির ৭ উইকেটই সেরা ফিগার। গতকালের আগে নকআউট পর্বে সর্বোচ্চ ৬ উইকেট শিকারের কীর্তি ছিল দুজনের। ১৯৭৫ বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪ রানে ৬ উইকেট শিকার করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার গ্যারি গিলমোর।
এরপর ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই সুপার সিক্সের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের শেন বন্ড পেয়েছিলেন ৬ উইকেট। সেবার ২৩ রানের বিনিময়ে ৬ জন অজি ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরান বন্ড।