বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল থেকে একের পর এক মিছিল আসে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে। স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয় আশেপাশের এলাকা। আবার কোনো কোনো প্রার্থীর সমর্থকরা নির্দিষ্ট পোশাক পরে আসেন। তারা জড়ো হয়ে রীতিমতো সমাবেশও করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে। আচরণবিধি মানার বালাই বেশিরভাগই প্রার্থীরই।
অথচ রিটার্নিং কর্মকর্তা কার্যালয়ের পাশেই রয়েছে চট্টগ্রাম আদালত ভবন। যেখানে বিচারিক কার্যক্রম চলে দিনভর। স্লোগান-মিছিলের কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয় বিচারপ্রার্থীদেরও। পুরো আদালত পাড়া এলাকায় দিনভর লেগেই ছিল যানজট।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালার ৮ (খ) ধারায় বলা হয়েছে, মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো প্রার্থী কোনো ধরনের মিছিল কিংবা শো-ডাউন করতে পারবেন না। (ক) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী, ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল, নৌযান, ট্রেন কিংবা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহন সহকারে মিছিল বা শো-ডাউন করতে পারবেন না।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বিপুল পরিমাণ সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন চট্টগ্রাম-১৬ আসনের নৌকা প্রতীকের মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান। এসময় তাকে আচরণবিধি নিয়ে প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক। সঙ্গে সঙ্গে এমপি মোস্তাফিজ উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং ওই সাংবাদিককে থাপ্পড় দিয়ে শার্টের কলার ধরেন। এ নিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মোস্তাফিজ সমর্থকদের কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রাম-১২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য তিনবারের সংসদ সদস্য ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর এবার নৌকার মনোনয়ন পাননি। তবে তিনি স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান। এসময় তার সঙ্গে বিপুল পরিমাণ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও চট্টগ্রাম-১১ আসনে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন এম এ লতিফ। তিনি বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন। এসময় তার সঙ্গে হাজারখানেক নেতাকর্মী ছিলেন। তারা নির্দিষ্ট পোশাক পরে মিছিল দিতে দিতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে পৌঁছান। সেখানে জমায়েত হয়ে ঘণ্টাখানেক সমাবেশ করে বক্তব্য-স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, বাঁশখালীর এমপির বিষয়ে সাংবাদিকরা একটি অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি জানিয়েছি। সেখান থেকে চট্টগ্রামের যুগ্ম জেলা জজ আবু সালেক মোহাম্মদ নোমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি ইতোমধ্যে সাংবাদিকদের জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। আগামীকাল (শুক্রবার) এমপি মোস্তাফিজ বা উনার প্রতিনিধিকে ডেকেছেন। সবমিলিয়ে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। এছাড়া বাকি প্রার্থী যাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনবিধি না মানার অভিযোগ উঠেছে, তাদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।