ঢাকা বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রার অগ্রদূত বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা


নিউজ ডেস্ক
৮:৩৪ - শনিবার, অক্টোবর ১৪, ২০২৩
বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রার অগ্রদূত বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা

প্রফেসর ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর

হাজার বছরে শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ত্রিশ লাখ শহীদের  রক্ত আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা অর্জন করেছি চূড়ান্ত বিজয়, পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র, পেয়েছি লাল-সবুজের গৌরবান্বিত একটি পতাকা ।

 স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শাসনভার গ্রহণ করেন স্বাধীনতা নামক মহাকাব্যের অমর কবি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর দেশ পুনর্গঠনে মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন তিনি। একটি দেশ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য, বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনানির্ভর একটি  আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।তাঁর সাড়ে তিন বছরের  সেই স্বদেশ নির্মাণের কর্মযজ্ঞ জাতি স্মরন রাখবে চিরকাল। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ঘাতকেরা সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেন। সে সময় দেশরত্ন শেখ হাসিনা দেশের বাইরে অবস্থান করছিলেন।সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ ভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেন ৭৫-এ পরিবার হারানো শেখ হাসিনা।ঐতিহাসিক সেই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নিরবচ্ছিন্ন দীর্ঘ সংগ্রাম শুরু হয়।১৯৮১ সালে দেশে ফিরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে লিপ্ত হওয়ার পরপরই তিনি শাসকগোষ্ঠির রোষানলে পড়েন। তাঁকে বারবার কারান্তরীণ করা হয় ।তাঁকে হত্যার জন্য  সশস্ত্র হামলা করা হয় বিভিন্ন সময়ে।কিন্তু সৃষ্টিকর্তার অপার কৃপায় কুচক্রীদের সব মরণফাঁদ ভেদ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তিনি অসীম সাহসে তাঁর লক্ষ্য অর্জনে থেকেছেন দৃঢ় অবিচল।

১৯৯৬ সালের ১২ জুনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের মধ্য দিয়ে দেশরত্ন শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা  গড়ার আজীবন লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি কাজ শুরু করেন। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক মুক্তির পাশাপাশি সব রকম শোষণ, বঞ্চনা, অন্যায়, অবিচার, জুলুমের বিরুদ্ধে তিনি সবসময় রাজনৈতিকভাবে সোচ্চার থেকেছেন এবং প্রতিবাদী ভূমিকা রেখে এসেছেন।২০০৯ সালে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর টানা তৃতীয় মেয়াদে দেশ পরিচালনা করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। টানা ১৪ বছরের এ শাসনামলে অর্থনীতির প্রায় সব সূচকে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল ভোগ করছে রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক।শেখ হাসিনার সততা, নিষ্ঠা, দৃঢ় মনোবল, প্রজ্ঞা ও অসামান্য নেতৃত্ব বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে অন্যরকম উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আজ দৃশ্যমান। একটা সময় বাংলাদেশকে উপহাস করে বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি। যারা সে সময় তলাবিহীন ঝুড়ি বলতো, আজ তারাই দেশের উন্নয়ন নিয়ে  প্রশংসা করেন। এটাই আওয়ামী লীগের বড় অর্জন, বড় সফলতা। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, রাশিয়াসহ সকলের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী  শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে যে স্বপ্ন দেশের মানুষকে দেখিয়ে ছিলেন, আজকে সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপলাভ করেছে। শেখ হাসিনা সরকার টানা তৃতীয় মেয়াদে দেশ পরিচালনা করছে। দেশবাসী আজ তাঁর যোগ্য নেতৃত্বের সুফল পাচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর খুনি ও একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য সম্পন্ন এবং রায় কার্যকর করা, সংবিধান সংশোধনের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, একদিনে ১০০ সেতুর উদ্বোধন, ১০০ মহাসড়ক-সড়ক উদ্বোধন, একদিনে ১ কোটি মানুষকে করোনা টিকার আওতায় আনা, পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি ও সমুদ্রের বুকে বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে সুনীল অর্থনীতির নতুন দুয়ার উন্মোচন, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে মহাকাশ বিজয়, সাবমেরিন যুগে প্রবেশ, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, পদ্মা রেল সেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মহাসড়কগুলো ফোর লেনে উন্নীত করা, এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন, মাথাপিছু আয় ২৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত, শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনাসহ যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ।

২০০৯ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন দায়িত্ব নেন, তখনও দেশের মাত্র ৪৭ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পেত। নিয়মিত লোডশেডিংয়ে তখন জনজীবন বিপর্যস্ত ছিল। বিদ্যুৎ খাতের এই করুণ অবস্থার কারণে বৃহৎ শিল্পগুলো যেমন একদিকে ধুঁকছিল, তেমনিভাবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়েও কোনো উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব ছিল না। কিন্তু মাত্র এক যুগের মধ্যে দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করতে সমর্থ হয় আওয়ামী লীগ সরকার। একইসঙ্গে দেশকে ডিজিটালাইজড করার উদ্যোগ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে শতভাগ বিদ্যুতায়নের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে  ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয় ইন্টারনেট সুবিধা ।

লেখকঃ ট্রেজারার, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়