গ্রাহকদের বিমার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চেকের টাকা না পেয়ে ‘সান ফ্লাওয়ার লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানী লিমিটেডের ‘আল আরাফা ইসলামী জীবন বিমা (তাকাফুল)’ নোয়াখালী সার্ভিস সেল কার্যালয়ে তালা দিয়েছে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। একই সঙ্গে কার্যালয়টি ঘেরাও করে রেখেছে কয়েকশ গ্রাহক। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলা শহর মাইজদীর কেএমই ভবনের তৃতীয় তলায় অবস্থিত বিমা কার্যালয়ের মূলফটকের সামনে থেকে সিঁড়ি হয়ে সড়ক পর্যন্ত কয়েকশ গ্রাহকের দীর্ঘসারি। মেয়াদ উত্তীর্ণ বিমার চেকের টাকা ও নিজেদের জমাকৃত টাকা ফেরত পেতে বিমা কার্যালয়টির সামনে বিক্ষোভ করছে তারা।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) বিকেলে চেকপ্রাপ্ত গ্রাহকদের টাকা দেওয়ার জন্য পুলিশের সহযোগিতায় কার্যালয়ে আসেন কোম্পানির ডিএমডি মো. মিজানুর রহমান।
বিক্ষুব্ধ গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২০১৮ সালে বিমার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর নোয়াখালী কার্যালয়ে আসার পর তারা গ্রাহকদের ঢাকা প্রধান কার্যালয়ে চেকের জন্য পাঠান। কিন্তু প্রধান কার্যালয় থেকে চেক নিয়ে আর পর থেকে আজ পর্যন্ত নোয়াখালী কার্যালয় থেকে টাকা ক্যাশ করতে পারেনি তারা। চেক নিয়ে টাকার জন্য এলে বিভিন্ন কথা বলে গ্রাহকদের চলে যেতে বলেন দায়িত্বরতরা। শুধু ২০১৮ সাল না, এর পরবর্তী সময়ে যাদের বিমার মেয়াদ শেষ হয়েছে সেই গ্রাহকরাও এখনও টাকা পায়নি।
তারা আরও জানান, নিজেদের দাবিকৃত বিমার টাকা পাওয়ার দাবিতে বুধবার বিকেলে বিমা কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে সামনে অবস্থান নেন কয়েকজন গ্রাহক। পরবর্তীতে বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ওইস্থানে গ্রাহকদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। বর্তমানে তারা সবাই কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছেন।
বিমার জেলা কার্যালয়ের তথ্য মতে, এ কার্যালয়ের অধিনে প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহক বিভিন্ন মেয়াদে বিমা করেছেন। যার মধ্যে অন্তত ১০ হাজার গ্রাহকের বিমার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। এ গ্রাহকদের কোম্পানি থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকার মতো পাওনা রয়েছে। এসব গ্রাহকরা ২ হাজার টাকা থেকে শুরু করে প্রতি বছর জমা দিয়ে থাকেন।
সুধারাম মডেল থানা পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠান বলেন, প্রধান কার্যালয় থেকে বিমা কোম্পানির কয়েকজন কর্মকর্তা এসেছেন। তারা গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সর্তক অবস্থানে রয়েছে।
বিমা কোম্পানির ডিএমডি মো. মিজানুর রহমান বলেন, যেসব গ্রাহকের বিমার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে এবং যার কাছ থেকে দলিল জমা নেওয়া হয়েছে, তাদের যাচাই বাচাই করে প্রাপ্ত টাকা দেওয়া শুরু করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সবার টাকা দেওয়া হবে।