ঢাকা বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

ঠাকুরগাঁওয়ের কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি


নিউজ ডেস্ক
৩:৫৩ - শনিবার, এপ্রিল ৩০, ২০২২
ঠাকুরগাঁওয়ের কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

ঠাকুরগাঁওয়ের পাঁচটি উপজেলায় তাণ্ডব চালিয়েছে কালবৈশাখী। এতে লন্ডভন্ড হয়েছে সদর, রানীশংকৈল, বালিয়াডাঙ্গী, হরিপুর, পীরগঞ্জ উপজেলার শতাধিক গ্রাম। এ ঝোড়ো বৃষ্টিতে আম, ধান, ভুট্টাসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।

শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে হালকা বৃষ্টি হওয়ার পর থেমে যায়। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় এসব গ্রাম।

জানা যায়, বৃষ্টির পরিমাণ কম হলেও ঘূর্ণিঝড় বাতাসের বেগ বেশি ছিল। কোথাও কোথাও ভারী বজ্রপাতও হয়েছে। অনেক মানুষের থাকার একমাত্র স্থাপনার সবকিছু বাতাসে উড়ে গেছে। ঝড়ে ভেঙে পড়েছে কাঁচা-পাকা ঘর। উড়ে গেছে ঘরের চালা। উপড়ে পড়েছে হাজার হাজার গাছ। ভেঙে পড়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। আর পাঁচ উপজেলায় ঝড়ে ঘরের দেয়ালচাপা পড়ে, গাছের ডাল পড়ে, প্রাচীরের ইট পড়ে বিভিন্নভাবে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ।

দুই শতাধিক গবাদি পশু আহত হওয়ার পাশাপাশি বেশ কিছু এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করতে গিয়ে হারিয়ে গেছে। ধান, ভুট্টা ও কলার উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

রাণীশংকৈল উপজেলার রাতোর গ্রামের আব্দুল গফুর বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে আমরা চারপাশে ক্ষতিগ্রস্ত হলাম। ঘরের টিনের চালাগুলো উড়ে চলে গেছে। যেটুকু আবাদ করেছিলাম, সে স্বপ্ন নষ্ট হয়ে গেল। এখন কীভাবে এ ধাক্কা কাটিয়ে উঠব বুঝে উঠতে পারছি না।

একই উপজেলা ফরিঙ্গাদিঘী গ্রামের আয়েশা খাতুন বলেন, মোর আপন কেউ নাই। মাইনসের বাড়িত কাজ কইরা দিন আনু আর দিন খাও। এই ঝড়ত মোর সব শেষ হইয়া গেল। যে বাতাস মেঘ চিলকন (বিদ্যুৎ চমকানো) মনে হইল বাচিমনি। এলা কীভাবে মুই থাকিম। আর কুন্ঠে মুই থাকিম। 

সদর উপজেলার হাজিপাড়ার হারুন রশীদ বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে গ্রামের মানুষের ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি এবারে আমরাও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমাদের অনেকগুলো প্রাচীর ভেঙে পড়ে গেছে৷ অনেক ঘরের ওপরে গাছ পরে গেছে। কয়েক মিনিটের অপ্রত্যাশিত ঝড়ে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।

সমাজকর্মী আশরাফুল ইসলাম বলেন, রাতে কালবৈশাখী ঝড়ে গ্রামের মানুষের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেকের একমাত্র থাকার ঘর বিধস্ত হয়ে গেছে। পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়ে গেছে। সরকারি সহায়তা ও সমাজের বিত্তবানদের দ্রুত সময়ের মধ্যে সেসব মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত।

জেলা ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার মকবুল হোসেন বলেন, আমরা ঘুরে ঘুরে পরিস্থিতি দেখার চেষ্টা করছি। প্রবল বেগে ঝড় বয়ে যাওয়ায় অনেক জায়গায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। শহরে চারটি স্থানে বড় গাছ উপড়ে পড়েছে। বহু গাছ ভেঙে পড়েছে। এগুলো সরানো হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু হোসেন বলেন, ঝড়ের কারণে আম-লিচু বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। কৃষির সব মৌসুমি ফসলের ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ আজ বিকেলে জানা যাবে।