‘ইজতেমা গতকাল শুরু হলেও যেতে পারিনি। যেহেতু আজ অফিস ছুটি, সেজন্যই ইজতেমার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। জোহরের নামাজ ইজতেমা মাঠে পড়ে আবার রওনা করবো। ইজতেমার উছিলায় মেট্রোরেলেও চড়ার সুযোগ হয়ে যাবে।’
উচ্ছ্বসিত মুখেই কথাগুলো বলছিলেন মেট্রোরেলের আগারগাঁও স্টেশনে অপেক্ষারত ইজতেমাগামী যাত্রী হাজী শহীদুল ইসলাম।
মেট্রোরেলে ওঠার জন্য মুসল্লিরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও ট্রেনে ওঠার পর খুব অল্প সময়েই উত্তরা পৌঁছে যাচ্ছেন। এরপর উত্তরার স্টেশন থেকে পায়ে হেঁটে কম সময়েই ইজতেমা মাঠে যাওয়া যাচ্ছে।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে মেট্রোরেলের আগারগাঁও স্টেশনে গিয়ে শহীদুলের মতো ইজতেমাগামী অসংখ্য যাত্রীর দীর্ঘ লাইন দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, যানজটে নাকাল রাজধানীবাসীদেরকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে স্বপ্নের মেট্রোরেল। মেট্রোরেলে ওঠার জন্য মুসল্লিরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও ট্রেনে ওঠার পর খুব অল্প সময়েই উত্তরা পৌঁছে যাচ্ছেন। এরপর উত্তরার স্টেশন থেকে পায়ে হেঁটে কম সময়েই ইজতেমা মাঠে যাওয়া যাচ্ছে।
মেট্রোরেলের কারণে আগারগাঁও, মিরপুর, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডিবাসীদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাগব হচ্ছে বলে জানান সাধারণ মানুষ।
এদিকে ভোর থেকেই মেট্রোরেলে চড়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন ইজতেমাগামী যাত্রীরা। যাত্রীদের এই লাইন মেট্রোরেল স্টেশন থেকে পাসপোর্ট অফিস পর্যন্ত ঠেকেছে। লাইনে থাকা যাত্রীদের খুব সুশৃঙ্খলভাবে এক এক করে গেট দিয়ে প্রবেশ করাচ্ছে দায়িত্বরত পুলিশ ও আনসাররা। একইসঙ্গে মাইকে বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছে স্টেশনের কর্মকর্তারা।
ধানমন্ডি থেকে আসা ইজতেমামুখী যাত্রী তৌহিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, যানজটের কথা বিবেচনা করেই মেট্রোরেলে করে ইজতেমায় যাবো। যদিও মেট্রোরেলে চড়ে টঙ্গী পর্যন্ত যাওয়া সম্ভব হবে না। তারপরও উত্তরা পর্যন্ত যেতে পারলে বাকি পথ হেঁটে চলে যাবো।
মফিদুর রহমান নামের আরেক যাত্রী জানান, আমি মিরপুর থেকে এসেছি। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও মেট্রোরেলে উঠলেই দ্রুত সময়ে চলে যেতে পারবো। ইজতেমা শেষে আবার মেট্রোরেলে চড়েই আগারগাঁও ফিরবো। গতকাল জুম্মায় অংশ নিতে না পারলেও আজ পবিত্র ইজতেমায় শামিল হতে পারবো বলে আশা করছি।
প্রসঙ্গত, টঙ্গীর তুরাগ পাড়ে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জমায়েতে একত্রিত হয়েছেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। গতকাল শুক্রবার ভোরে পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হকের আম বয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় তাবলীগ জামায়াতের সবচেয়ে বড় এ আসর। প্রতিবারের মতো এবারও ইজতেমাগামী মানুষের চাপে রাজধানী ঢাকার যানজট চরমে। তবে এ সংকট থেকে রাজধানীর মুসল্লিদের কিছুটা হলেও পরিত্রাণ দিয়েছে মেট্রোরেল।
এ বছরও দুই পর্বে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম পর্ব সমাপ্তির পর ৫ দিন বিরতি দিয়ে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা আগামী ২০শে জানুয়ারি শুরু হবে। প্রথম পর্বে ১৩ থেকে ১৫ই জানুয়ারির ইজতেমায় অংশ নিচ্ছেন মাওলানা জোবায়ের আহমেদের অনুসারীরা। পরবর্তীতে আগামী ২০ জানুয়ারি ফজর থেকে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় অংশ নিবেন মাওলানা সাদ আহমাদ কান্ধলভীপন্থি মুসল্লিরা। ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা।