জান্নাতুল ফেরদৌস :: আধুনিকতার ছোঁয়ায় আমার দিন দিন যেমন আরও আধুনিক ও সুবিধাবাদি হয়ে উঠছি। সেই সাথে সাথে হারিয়ে ফেলছি আমাদের ঐতিহাসিক সংস্কৃতির ধারাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় কালের পরিক্রমায় হারিয়ে গেছে "ভিস্তিওয়ালা বা সাক্কা " নামক একসময়ের ঐতিহাসিক পেশা।
ভিস্তিওয়ালাদের প্রধান কাজই ছিল বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা। আর তারা এই বিশুদ্ধ পানি পরিবহন করতো "মশক" নামক ছাগলের চামড়া দ্বারা তৈরীকৃত থলে বা ব্যাগে।
বলা হয় , ঊনবিংশ শতাব্দীতে ঢাকায় যখন তীব্র পানীয় জলের সংকট দেখা দেয়। তখন ঢাকাবাসীদের একমাত্র ভরসা ছিল এই ভিস্তিওয়ালারা। যারা "সাক্কা" নামেও পরিচিত।
ভিস্তিওয়ালাদের আরেকটু পেছনের ইতিহাস ঘাটলে জানা যায়, এক ভিস্তিওয়ালা তার সাহসিকতা ও উপস্থিত বুদ্ধির মাধ্যমে সম্রাট হুমায়ুনের জীবন বাঁচালে সম্রাট হুমায়ুন কৃতজ্ঞতা স্বরূপ সেই ভিস্তিওয়ালাকে একদিনের জন্য আগ্রার মসনদে শাসন করার ক্ষমতা প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, কালের বিবর্তনে ও আধুনিক প্রযুক্তির যুগে হারিয়ে গেছে ভিস্তিওয়ালারা। ১৮৭৯ সালে নবাব আবদুল গনি ও নবাব আহসানউল্লাহর যৌথ প্রচেষ্টায় চাঁদনীঘাটে স্থাপন করা হয় পানি শোধনাগার "ঢাকা ওয়াটার - ওয়ার্কস"। যার ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে ঢাকায় " ওয়াসা" নির্মাণ করায় নগরবাসীর বিশুদ্ধ পানির ঘাটতি দূর হওয়ার সাথে সাথে উন্নয়নের চাকা ঘুরলেও ভিস্তিওয়ালাদের ভাগ্যের চাকা দুমড়ে মুচড়ে যায়। সেই সাথে সাথে বিলীন হয়ে যায় ভিস্তিওয়ালাদেরও অস্তিত্ব।