ঢাকা বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

সংঘর্ষ এড়িয়ে বিটিভিতে বিজিবির কৌশলী পদক্ষেপ


নিউজ ডেস্ক
১৭:৫৮ - শনিবার, আগস্ট ৩, ২০২৪
সংঘর্ষ এড়িয়ে বিটিভিতে বিজিবির কৌশলী পদক্ষেপ

বিশেষ প্রতিনিধি:: ১৮ জুলাই বিকেল ৩টা। অস্থিরতার সুযোগে বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভি ভবনে আক্রমণ করে দুষ্কৃতিকারীরা। খবর পেয়ে বিজিবির নিকটবর্তী টহল দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছায়। কিন্তু হাজার হাজার দুষ্কৃতিকারীর তুলনায় টহল দলের জনবল অতি সামান্য। ততক্ষণে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে গেছে। হাজার হাজার দুষ্কৃতিকারী ঘিরে ফেলেছে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ভবন। আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে বিজিবির প্রথম দলটির সদস্যরা। কিন্তু নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীরা তাদের অবরুদ্ধ করে রাখার পাশাপাশি পুড়িয়ে হত্যার হুমকি দেয়।


এদিকে বিটিভি সরকারের কেপিআই ভুক্ত এলাকা হলেও আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়নি বিজিবির সদস্যরা। শান্তিপূর্ণ ভাবে সমস্যার সমাধান চেয়েছে। 

কারণ সরকারের আইন অনুযায়ী কেপিআইভুক্ত এলাকায় হামলা হলে সরাসরি গুলি চালানোর নির্দেশ রয়েছে। 

এ পরিস্থিতিতে পিলখানা থেকে রামপুরায় বিটিভি ভবনের দিকে রওয়ানা দেয় বিজিবির আরেকটি দল। আর্মড পারসোনেল ক্যারিয়ার ও রায়ট কট্রোল ভেহিকেলসহ অপেক্ষাকৃত বেশি শক্তিশালী দলটি হাতিরঝিল পৌছানোর পর ব্যারিকেডের মুখে পড়ে। এরপর সেখানেই গাড়ি রেখে পায়ে হেঁটে ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দেয় দলটি। শহরজুড়ে রাস্তায় হাজার হাজার উশৃঙ্খল মানুষ। পথে পথে বাধা। দফায় দফায় সংঘর্ষ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্য দিযে সব বাধা অতিক্রম করে দ্বিতীয় দলটি বিটিভি ভবনের কাছে পৌঁছায়।  


পদব্রজে থাকা দলটির অধিনায়ক স্থানীয় উশৃঙ্খল জনতাকে শান্ত করার প্রাণান্তকর চেষ্টা চালান। তাদের সাথে সমঝোতার চেষ্টা করেন। আলোচনার ফাঁকে কৌশলে বিটিভি কম্পাউন্ডের মধ্যে ঢুকে পড়ে বিজিবি। ভেতরে অবস্থানরত নাশকতাকারীদের একে একে বের করে দেন তারা। কিন্তু বাইরে তখন হাজার হাজার মারমুখী মানুষ। চারদিক থেকে ঘিরে ধরে রেখেছে বিটিভি ভবনকে। বিজিবি সদস্যদের কলেমা পড়ার জন্য ১৫ মিনিট সময় দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। পরিস্থিতি ঘোলাটে হওয়ার দ্রুত আরও শক্তি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয় বিজিবি সদর দফতর। রামপুরার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় আরেকটি দল। রাত ভর দফায় দফায় সংঘর্ষের পর মধ্যরাতে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।

১৯ জুলাই শুক্রবার জুমার নামাজের পর পরিস্থিতি আবারও ঘোলাটে হয়ে ওঠে। রামপুরা, আফতাব নগর, বাড্ডাসহ আশপাশে এলাকায় মাইকিং করে বিটিভি দখলের জন্য লোকজন জড়ো করতে থাকে কুচক্রীমহল। যুদ্ধাংদেহী হাজার হাজার মানুষের বিপরীতে কয়েক শ সৈনিক। টিভি ভবনকে কেন্দ্র করে টিভি রোড, মেরুল বাড্ডা এবং বনশ্রী রোডে ৩টি ব্লক স্থাপন করে আক্রমণ প্রতিহত করে। নাশকতাকারীরা রামপুরা থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, পিবিআই কার্যালয়, আনসার ক্যাম্প দখল করে অগ্নিসংযোগ করে। আনসার ক্যাম্পের বাইরে থেকে তালা দিয়ে অগ্নিসংযোগ করে আনসার সদস্যদের  জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টাও করা হয়। বিজিবি সদস্যরা উপস্থিত বুদ্ধি, রণকৌশল ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।


এভাবেই বিজিবি সদস্যরা নাশকতাকারীদের আক্রমণ প্রতিহত করে বিটিভি ভবন পুনরুদ্ধার করে রাষ্ট্রীয় স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।  ভেস্তে যায় কুচক্রী মহলের নীলনকশা। সকলের জেনে রাখার জন্য বলছি, ঐদিন বিটিভি ভবনের আশেপাশে ছাত্রদের কোন কর্মসূচি ছিল না আর বিজিবির ফায়ারিং ছিল মূলত ফাকা রাউন্ড যার জন্য রামপুরা বিটিভি ভবন এলাকায় কেউ নিহত হয়েছে এরকম কোন দাবিও কোথাও থেকে আসেনি।