নেত্রকোনা প্রতিনিধি
নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে চেয়ারম্যান প্রার্থী সামছুজ্জামান তালুকদার সোয়েবের নির্বাচনী প্রচারণা ক্যাম্প ভাঙচুরের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী রাব্বানী জব্বারের ১০ সমর্থক উপজেলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চাকুয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, মেন্দিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল কবীর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মেন্দিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. লোকমান হাকিম, মেন্দিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক আবু হাকিম, চাকুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. খলিল মিয়া, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো মাসুদ রানা ও খালিয়াজুরী উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মো. কাওছার আহমেদসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
বুধবার (২২ মে) খালিয়াজুরী থানার ওসি খোকন কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার বিকালে উপজেলার আসাদপুর গ্রামে থাকা সামছুজ্জামান তালুকদার সোয়েবের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরের ঘটনার অভিযোগ এনে খালিয়াজুরী থানায় মামলাটি করা হয়।
সোমবার বিকাল ৩টায় ভাঙচুর হয় বলে দাবি করে মঙ্গলবার গভীর রাতে চেয়ারম্যান প্রার্থী সামছুজ্জামান তালুকদার সোয়েবের সমর্থক উপজেলার আসাদপুর গ্রামের বাসিন্দা আলমগীর ফকির বাদি হয়ে এ মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে আলমগীর ফকির জানান, চলমান উপজেলা নির্বাচনে আমরা চেয়ারম্যান প্রার্থী সামছুজ্জামান তালুকদার সোয়েবের সমর্থক হিসেবে আসাদপুর গ্রামে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি। কিন্ত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী গোলাম রব্বানী জব্বারের ওই সমর্থকরা প্রচারণা বাধাগ্রস্ত করতে আমাদের নানা ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছিল। এক পর্যায়ে গত সোমবার বিকালে আবুল কালাম আজাদসহ অন্যরা রামদা, লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পে হামলা চালান। ক্যাম্প ভাঙচুর করেন। সেইসঙ্গে আমাদের পক্ষের কয়েকজনকে হামলা চালিয়ে আহত করেন।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে আসাদপুর গ্রামের আলমগীর ফকির বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দেন। রাতে এটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
মামলার প্রধান আসামি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং চাকুয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ মামলা সম্পর্কে বলেন, এটি একটি মিথ্যা মামলা। আমরা এমন কোনো ঘটনাই ঘটাইনি। প্রতিপক্ষ হিসেবে আমাদের হেয় প্রতিপন্ন ও হয়রানি করার জন্য এবং আমাদের প্রার্থী রব্বানী জব্বারের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করার জন্য এমন নাটক সাজানো হয়েছে। আবুল কালাম আজাদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশে নির্দলীয়ভাবে উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার লক্ষে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্বক সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এই হয়রানিমূলক মামলা ২৯ মে অনুষ্ঠিতব্য খালিয়াজুরী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে বাধাগ্রস্থ করার পায়তারা ছাড়া আর কিছুই নয়। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইনগতভাবেই মামলাটি মোকাবেলা করব।
মেন্দিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাকিম বলেন, যে নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরের অভিযোগ এনে আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তা সত্য নয়। কারণ, আমি সোমবার সেই ঘটনাস্থলে উপস্থিতই ছিলাম না। মেন্দিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল কবিরও জানান, তিনিও সেদিন ওই এলাকায় যাননি।
খালিয়াজুরী থানার ওসি খোকন কুমার সাহা বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তৃতীয় ধাপে আগামী ২৯ মে নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে চেয়ারম্যান পদে মোট ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উল্লেখ্য, উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী রব্বানী জব্বার সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের ছোট ভাই।