আমিনুল ইসলাম বুলবুল:: প্রবাসীরা দেশের সত্যিকারের হিরো। দেশের অর্থনীতি যখন সংকটের মুখে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যখন অস্বাভাবিক হারে কমতে শুরু করেছে, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে চার দিকে শঙ্কার কথা, ঠিক সেই সময়ে এক মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রবাসীরা। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসী আয় হয়েছে ২.৯ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ২০৯ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যাওয়ার পর শুরু হয় নানা ধরনের কথা। গত দুই বছরের মধ্যে রিজার্ভ কখনোই ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামেনি। অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন, বৈদেশিক মুদ্রার যে রিজার্ভ আছে , তা দিয়ে মাত্র তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
রিজার্ভের উপর চাপ কমাতে নানা ধরনের ব্যয় সংকোচ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সরকার। তেলের আমদানি ব্যয় কমাতে সরকার সিডিউল মেনে সারা দেশে লোডশেডিং শুরু করে। দেশে সকল পণ্যের দাম লাগামহীন ভাবে বাড়তে শুরু করেছে। ডলারের বিপরীতে টাকার দাম কমছে। বাংলাদেশ থেকে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নকে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার আমদানি দায় পরিশোধ করতে হয়। এ কারণে রিজার্ভ কমে ৩৯.৭৭ বিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়ায়। কিন্তু আগের বছর জুলাইয়ে রিজার্ভ ছিল ৪৬ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা বেশি।
শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হয়ে যাওয়া ভয় সব সময় তাড়া করছে বাংলাদেশের কারও কারও মনে। তাই রিজার্ভ কমে আসায় মিডিয়াগুলোতে বেশ শোরগোল শুরু হয়েছে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে প্রবাসীরা প্রামাণ করলেন, দেশ থেকে দূরে থাকলেও তারা দেশকে হৃদয়ে ধারণ করেন। দেশে যখন রেমিট্যান্স সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ঠিক সে সময়ে তারা এক মাসে দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি পাঠিয়েছেন। এটিই গত ১৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রথম মাসে ২০৯ কোটি ৬৭ লাখ ১০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রবাসীরা। প্রতিদিন গড়ে ৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা পাঠিয়েছে তারা। এর আগে ২০২০ সালের মে মাসে ২১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছে প্রবাসীরা। তারপরই এবার এত বড় অঙ্কের প্রবাসী আয় এসেছে দেশে।