ঢাকা শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

Popular bangla online news portal

Janata Bank
Rupalibank

মাশাআল্লাহ কেন বলতে হয়


নিউজ ডেস্ক
৬:৩৯ - মঙ্গলবার, আগস্ট ২, ২০২২
মাশাআল্লাহ কেন বলতে হয়

‘মাশাআল্লাহ’ একটি দোয়া জাতীয় বাক্য। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন। এর অর্থ হচ্ছে, ‘আল্লাহ তায়ালা যা চান।’ কোনো ভালো জিনিস, পার্থিব লাভ, ধন-সম্পত্তি অর্জন ও উন্নতির পর এটা বলা হয়। এজন্য যখন কেউ অন্যের ভালো কোনো বিষয় ও উন্নতি দেখবেন তখন তার উচিত মাশাআল্লাহ বলা। এর মাধ্যমে ওই জিনিসটি অন্যের বদনজর থেকে রক্ষা পায়।

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়া সাল্লাম নিজেও ভালো কিছু দেখলে মাশাআল্লাহ বলার কথা বলেছেন। ভালো কিছু পেলে এর বিনিময়ে মাশাআল্লাহ বলার বিষয়টি আল্লাহ তায়ালা নিজেও পবিত্র কোরআনে শিক্ষা দিয়েছেন। এ নিয়ে পবিত্র কোরআনের সূরা কাহাফের ৩২-৪৩ নম্বর আয়াতে দুই ব্যক্তির ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। 

কোরআনের ভাষ্য- 

‘তুমি তাদের কাছে পেশ কর দুই ব্যক্তির একটি উপমা; তাদের একজনকে আমি দিয়েছিলাম দু’টি আঙ্গুর বাগান এবং সে দু’টিকে আমি খেজুর বৃক্ষ দ্বারা পরিবেষ্টিত করেছিলাম। আর এই দুয়ের মধ্যবর্তী স্থানকে করেছিলাম শস্যক্ষেত্র। উভয় বাগানই ফল দান করত এবং এতে কোন ত্রুটি করত না। আর উভয়ের ফাঁকে ফাঁকে প্রবাহিত করেছিলাম নদী। 

তার প্রচুর ধন-সম্পদ ছিল। অতঃপর কথা প্রসঙ্গে সে তার বন্ধুকে বলল, ‘ধন-সম্পদে তোমার তুলনায় আমি শ্রেষ্ঠ এবং জনবলে তোমার তুলনায় আমি বেশী শক্তিশালী।’এভাবে নিজের প্রতি যুলুম করে সে তার বাগানে প্রবেশ করল। 

সে বলল, ‘আমি মনে করি না যে, এটা কখনও ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি মনে করি না যে,কেয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবে। আর আমি যদি আমার প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবৃত্ত হই-ই, তাহলে আমি অবশ্যই এটা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট স্থান পাব। তাকে তার বন্ধু বলল, ‘তুমি কি তাঁকে অস্বীকার করছ, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি হতে ও পরে বীর্য হতে এবং তারপর পূর্ণাঙ্গ করেছেন মনুষ্য আকৃতিতে? 

এছাড়া এ আয়াত থেকে সালফে সালেহীনের কেউ কেউ বলেন, কোনো পছন্দনীয় বস্তু দেখার পর যদি (مَا شَاءَ اللَّهُ لَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ) বলে দেয়া হয়, তবে কোন বস্তু তার ক্ষতি করে না। অর্থাৎ পছন্দনীয় বস্তুটি নিরাপদ থাকে বা তাতে চোখ লাগার মত ক্ষতি হয় না।

 

কিন্তু আমি বলি, তিনি আল্লাহই আমার প্রতিপালক এবং আমি কাউকেও আমার প্রতিপালকের শরীক করি না। তুমি যখন ধনে ও সন্তানে তোমার তুলনায় আমাকে কম দেখলে, তখন তোমার বাগানে প্রবেশ করে তুমি কেন বললে না,  মাশাআল্লাহ , লা-হাওলা ওলা কুউওয়াতা ই-ল্লাবিল্লা (আল্লাহ যা চেয়েছেন তা-ই হয়েছে; আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত কোন শক্তি নেই।’)

সম্ভবত, আমার প্রতিপালক আমাকে তোমার বাগান অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর কিছু দেবেন এবং তোমার বাগানে আকাশ হতে আগুন বর্ষণ করবেন; যার ফলে তা মসৃণ ময়দানে পরিণত হবে। অথবা ওর পানি ভূ-গর্ভে অন্তর্হিত হবে এবং তুমি কখনো ওকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না।’ 

তার ফল-সম্পদ পরিবেষ্টিত হয়ে গেল এবং সে তাতে যা ব্যয় করেছিল, তার জন্য হাত কচলিয়ে আক্ষেপ করতে লাগল; যখন তা মাচানসহ পড়ে গেল। সে বলতে লাগল, ‘হায়! আমি যদি কাউকেও আমার প্রতিপালকের শরীক না করতাম।’ ( সূরা কাহাফ, আয়াত, ৩২-৪৩)

কোরআনে বর্ণিত এই ঘটনায় আল্লাহর নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার পদ্ধতি জানিয়ে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে, বাগানে প্রবেশ করার সময় অবাধ্যতা ও অহংকার প্রদর্শন না করে এইভাবে বললেই ভাল হত, مَا شَآءَ اللهُ لاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ যা কিছু হয় আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয়। তিনি চাইলে তা অবশিষ্ট রাখবেন এবং ইচ্ছা করলে ধ্বংস করে দিবেন। 

এই জন্যই হাদীসে এসেছে যে, ‘যাকে কারো মাল, সন্তান-সন্ততি অথবা অবস্থা ভাল লাগে, সে যেন বলে, ‘মা শাআল্লাহু লা ক্বুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’ (তাফসীর ইবনে কাসীর, মুসনাদ আবূ ইয়া’লা)

এছাড়া এ আয়াত থেকে সালফে সালেহীনের কেউ কেউ বলেন, কোনো পছন্দনীয় বস্তু দেখার পর যদি (مَا شَاءَ اللَّهُ لَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ) বলে দেয়া হয়, তবে কোন বস্তু তার ক্ষতি করে না। অর্থাৎ পছন্দনীয় বস্তুটি নিরাপদ থাকে বা তাতে চোখ লাগার মত ক্ষতি হয় না। -(ইবন কাসীর)

কোরআনে বর্ণিত এই ঘটনায় আল্লাহর নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার পদ্ধতি জানিয়ে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে, বাগানে প্রবেশ করার সময় অবাধ্যতা ও অহংকার প্রদর্শন না করে এইভাবে বললেই ভাল হত, مَا شَآءَ اللهُ لاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ যা কিছু হয় আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয়। তিনি চাইলে তা অবশিষ্ট রাখবেন এবং ইচ্ছা করলে ধ্বংস করে দিবেন। 

 এ আয়াতের মত একটি হাদিসও এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বললেন,‘আমি কি তোমাকে জান্নাতের একটি মূল্যবান সম্পদের সন্ধান দেব না? সেটা হলো, ‘লা হাওলা ওলা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’ (বুখারী: ৬৩৮৪, মুসলিম: ২৭০৪)